থানে:  আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন দাউদ ইব্রাহিম কসকর বর্তমানে মারাত্মক হতাশায় ভুগছেন, মূলত পারিবারিক কারণে। পুলিশ সূত্রে খবর, বিশাল লোকবল, ক্ষমতা, বন্দুকের জোর থাকলেও, সেই সমস্যা সমাধান করতে পারছেন না দাউদ। সূত্রের খবর, ডনের তৃতীয় এবং একমাত্র পুত্র সন্তান মইন নওয়াজ ডি কসকর পারিবারিক ব্যবসা থেকে মুখ ঘুরিয়ে মৌলবী হয়েছেন। এমনকি জানা গিয়েছে, তিনি একজন আদর্শবান মুসলিমও।


৩১ বছরের মইন বাবার এই অবৈধ ব্যবসার সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে রয়েছেন। অথচ এই পরিবারেরই সারা দুনিয়ায় কুখ্যাতি রয়েছে সন্ত্রাস ছড়ানো, তোলাবাজি, খুনের মতো একাধিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকার। তাঁদের আতঙ্কে আতঙ্কিত গোটা দুনিয়া। অথচ, সেই কার্যকলাপের ব্যাপারে বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই মইনের, সংসবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন থানের এটিসি-র প্রধান প্রদীপ শর্মা। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পুলিশের জালে গ্রেফতার হওয়া দাউদের ভাই ইকবাল ইব্রাহিম কসকর একথা জেরার মুখে জানিয়েছেন শর্মাকে। এদিকে পরিবারের মধ্যে বেড়ে চলা সংঘাত নিয়েও ইদানিং চিন্তায় আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন। তাঁর মূল চিন্তার কারণ, তাঁর বিশাল ব্যবসা দেখভালের কোনও লোক নেই।

দাউদের অপর ভাই আনিস ইব্রাহিম কসকরেরও বয়স হয়ে আসছে। তিনিও আর সেভাবে ব্যবসার দেখভাল করতে পারছেন না। এদিকে ডনের কোনও নিকটস্থ আত্মীয়ও ততটা বিশ্বাসী নন দাউদের যিনি এই ব্যবসার দেখভাল করতে পারবেন।

শর্মা আরও জানিয়েছেন, দাউদের ছেলে বাবা এবং তাঁর সাম্রাজ্য থেকে দীর্ঘদিনই দূরে রয়েছেন। এমনকি তিনি তাঁর বাবার সঙ্গে কথা বলেন কিনা, সেবিষয়ে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। মইনের কাকা থানের এটিসি প্রধানকে জানিয়েছেন, তাঁর ভাইপো বর্তমানে একজন সম্মানীয় মৌলানা। গোটা কোরানও ভাইপোর কন্ঠস্থ বলে জানিয়েছেন ইকবাল। শুধু সম্পর্ক নয়, দাউদের বিলাসবহুল বাংলোতেও থাকেন না মইন। তার বদলে তিনি ওই প্রাসাদপমো বাংলোর উল্টোদিকে একটি মসজিদে সাধারণ জীবনযাপন করেন। সেখানেই মইনের সঙ্গে থাকেন তাঁর স্ত্রী ও তিন সন্তান।

বিজনেস ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়াশোনা করা মইন শুরুরদিকে বাবাকে ব্যবসায় সাহায্য করলেও, ধীরে ধীরে আল্লার ডাকে আধ্যাত্মিক জগতের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ঝকঝকে সুন্দর, সুঠাম  চেহারার এই তরুণ ২০১১ সালে করাচির এক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী কন্যাকে বিয়ে করেন। তিনিও পাকিস্তান ও ব্রিটেনে তাঁর পারিবারিক ব্যবসার দেখাশোনা করতেন। কিন্তু সবকিছু ছেড়ে ওই তরুণী তাঁর স্বামীর সঙ্গে আধ্যাত্মিক জগতের সঙ্গী এখন।

মইনের বড় বোন মেহেরুখের সঙ্গে পাক ক্রিকেটার জাভেদ মিঁয়াদাদের ছেলে জুনেইদের বিয়ে হয় ২০০৬ সালে। ২০১১ সালে তাঁদের অপর বোন মাহেরিনের বিয়ে হয় মার্কিন ব্যবসায়ীর সঙ্গে জানিয়েছেন ইকবাল। এদিকে দাউদে শারীরিক অবস্থা নিয়ে যে খবর শোনা গিয়েছিল সংবাদমাধ্যমে, সেপ্রসঙ্গেও ইকবাল জানিয়েছেন, তাঁর দাদা শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ। এটিসি প্রধানের দাবি, আগামী দিনে তাঁরা ইকবালের থেকে দাউদ ও তাঁর পরিবার সম্পর্কে আরও অনেক অজানা তথ্য জানতে পারবেন।