মু্ম্বই: ধর্ষণ, যৌন নিগ্রহ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করায় নির্যাতিতা অনীহা করলে তাতে এটা বোঝায় না যে, তিনি মিথ্যা বলছেন। সম্প্রতি দত্তাত্রেয় কোরডে, গণেশ পরদেশি, পিন্টু খোসকার, গণেশ জোলে নামে চারজনকে ধর্ষণে দোষী ঘোষণার রায় বহাল রেখে এ কথা বলেন বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি এ এম বদর। ২০১৩-র এপ্রিলে তাদের গণধর্ষণে দোষী ঘোষণা করে দশ বছরের কারাদণ্ড দেয় দায়রা আদালত। চারজন তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করে। নাসিকের ত্র্যম্বকেশ্বরে এক মহিলা তাঁর বন্ধুর সঙ্গে ফিরছিলেন। ছেলেটিকে মারধর করে মহিলাকে গণধর্ষণ করে ওরা।

আদালতে ওরা দাবি করে, মহিলা ও তার পুরুষ বন্ধুকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলে অশালীনতার দায়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার ভয় দেখানোর জন্য তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। অভিযুক্তরা সওয়াল করে, মেয়েটি ২০১৩-র ১৫ মার্চ ধর্ষণ হয়েছিল বলে দাবি করলেও দুদিন বাদে অভিযোগ দায়ের করে। তাছাড়া মেডিকাল পরীক্ষায় মেয়েটির শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না বলে ধর্ষণের দাবিও খারিজ করা হয়েছে।

কিন্তু হাইকোর্ট তাদের দোষী সাব্যস্ত করে দেওয়া রায় বহাল রাখে, পুরানো একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণের উল্লেখ করে যে, একজন ভারতীয় মহিলা বা মেয়ে মিথ্যা যৌন নিগ্রহের অভিযোগ করেছেন, এমনটা সচরাচর দেখা যায় না।

বিচারক বলেন, রক্ষণশীল পরিবারের মেয়েটি, যার স্বামীর সঙ্গেও বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে, নিশ্চয়ই সামাজিক কলঙ্কের ভয় করছিল, নিজের বাবা-মা সমেত গোটা সমাজ ওকে হীন দৃষ্টিতে দেখবে বলে আশঙ্কা করছিল। ধর্ষণের ফলে এমনিতেই লজ্জায় কুঁকড়ে গিয়েছিল। তাই ওর সঙ্গে সঙ্গে থানায় না যাওয়ায় অস্বাভাবিকতা নেই। পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে লুকিয়ে চুরিয়ে বেরত বলে নিশ্চয়ই ওর মনে ভয় হয়েছিল যে, ধর্ষণের ঘটনাটি চাউর হয়ে গেলে সবাই ছি ছি করবে!
এ ধরনের 'ছোটখাট কারণে' অভিযোগ দায়ের করতে বিলম্বের জন্য ওর অভিযোগ মোটেই দুর্বল হয় না বলে জানান বিচারপতি।

শরীরে আঘাতের চিহ্ন না থাকায় যৌন নির্যাতন হয়নি, এমন সিদ্ধান্তে আসা যায় না বলেও অভিমত জানান তিনি।