নয়াদিল্লি: ‘ব্লু হোয়েল’-এর লিঙ্ক সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানিতে ফেসবুক, গুগল এবং ইয়াহু-র থেকে জবাব তলব করল দিল্লি হাইকোর্ট। জবাব তলব করা হয়েছে কেন্দ্রের থেকেও ।


মঙ্গলবার, হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি গীতা মিত্তল এবং বিচারপতি সি হরিশঙ্করের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ কেন্দ্র ও দিল্লি পুলিশকে নোটিস দিয়ে জানাতে বলেছে, এই মর্মে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

নোটিসের প্রেক্ষিতে এদিন দিল্লি পুলিশের তরফ জানানো হয়েছে, বাহিনীর সাইবার সেল এই ইস্যুতে সক্রিয় রয়েছে। একইসঙ্গে, তারা এ-ও জানায়, কেন্দ্রও এই মর্মে নির্দেশিকা দিয়েছে।

একইসঙ্গে, বিভিন্ন ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা ও সোশ্যাল মিডিয়ার ভারতীয় শাখাকে নোটিস দিয়ে উচ্চ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, ব্লু হোয়েল অনলাইন গেমকে নিষিদ্ধ করতে কেন্দ্রের নির্দেশিকার ভিত্তিতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তার স্টেটাস রিপোর্ট দাখিল করতে।

গত ১৫ তারিখ, গুগল, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম, মাইক্রোসফট ও ইয়াহু সহ দেশের প্রধান ইন্টারনেট সংস্থাকে মারণ ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জের লিঙ্ক সরাতে নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি ও ইলেক্ট্রনিক্স মন্ত্রক।

ব্লু হোয়েল-এর পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কেন্দ্রের তরফে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, এই গেম অনলাইনে থাকা সমাজের পক্ষে বিপজ্জনক। একে কোনও অবস্থাতেই প্রশ্রয় দেওয়া যায় না। তাই একে নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেয় কেন্দ্র।

প্রসঙ্গত, ব্লু হোয়েল চ্যালেঞ্জ-গেমের খপ্পরে পড়ে দেশে ও বিদেশে একাধিক কিশোর আত্মহত্যা করেছে এই দাবি তুলে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দাখিল করেন গুরমীত সিংহ নামে এক জনৈক আইনজীবী।

আদালত তাঁর আবেদন, ইন্টারনেট সংস্থাগুলিকে অবিলম্বে এই গেমের লিঙ্ক সরানোর নির্দেশ দেওয়া হোক। আগামী ২৮ তারিখ এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

ব্লু-হোয়েল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সেই অন-লাইন গেম, যেখানে ৫০ দিনের জন্যে প্লেয়ারকে একটি কাজ দেওয়া হয়। এই খেলার শেষ হয় আত্মহত্যা দিয়ে। এমনকি নিজের চ্যালেঞ্জ শেষ করার পর প্লেয়ারকে তাঁর পুরো কাজের ছবিও শেয়ার করতে হয়।

কিন্তু এমন ঝুঁকিপূর্ণ অনলাইন গেম, যার শেষ হল আত্মহত্যা, সেই নিয়ে কার্যতই এখন চিন্তিত সরকার। আর এই গেমে আগ্রহী মূলত কিশোর বয়সের ছেলে-মেয়েরাই।

সম্প্রতিই অনলাইন গেম ব্লু-হোয়েল চ্যালেঞ্জ খেলতে গিয়ে আত্মহত্যা করে ভারতের বেশ কয়েকটি শহরের খুদেরা। শুধু ভারত নয়, এই মারণ গেমের ফলে কিশোর ও যুবক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে রাশিয়া, সৌদি আরব, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, বুলগেরিয়া, চিলে এবং ইতালি।