নয়াদিল্লি: গত বছর গণধর্ষিতা হয়েছিল সে। এক সপ্তাহ ধরে নয়ডা, গাজিয়াবাদের নানা জায়গায় নিয়ে গিয়ে ২ জন তার ওপর বারবার অত্যাচার চালায় বলে অভিযোগ। ছেড়ে দেয় সপ্তাহখানেক বাদে। অথচ অপরাধীদের জেলে পাঠানোর বদলে বাবা মা এখন চেষ্টা করছে টাকার বিনিময়ে বোঝাপড়া করে ফেলতে। তাই এবার নিজের বাবা মায়ের বিরুদ্ধেই পুলিশে অভিযোগ করেছে দিল্লির ওই কিশোরী।


মেয়েটির বয়স মাত্র ১৫ বছর। কিন্তু তার মনের জোর দেখলে চমকে উঠতে হয়। মা বাবার বিছানার তলা থেকে লাখ লাখ টাকার তোড়া নিয়ে সোজা সে হাজির হয় প্রেম বিহার পুলিশ স্টেশনে। বলে, এতে ৩ লাখ টাকা রয়েছে, টাকার বিনিময়ে বাবা মা তাকে চাপ দিচ্ছে, ধর্ষণ নিয়ে বয়ান বদলে দিতে। পুলিশকর্মীরা গুনে দেখেন, ৩ নয়, তোড়ায় রয়েছে ৪.৯৬ লাখ টাকা!

অভিযোগকারিণীর বাবা মায়ের বিরুদ্ধে অপ্রাপ্তবয়স্কদের ন্যায়বিচার আইন ও অপরাধমূলক উদ্দেশে ভয় দেখানোর মামলা রুজু করেছে পুলিশ, তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যে প্রমাণ দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া আর অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। মেয়েটির মাকে গ্রেফতার করা হলেও চম্পট দিয়েছেন বাবা। যারা তাঁদের টাকা দিয়ে বোঝাপড়ার চেষ্টা করছিল তাদেরও ধরার চেষ্টা চলছে।

বাবা মায়ের সঙ্গে আমন বিহারের প্রেম নগরে থাকত মেয়েটি। তাঁরা এলাকায় ছোট দোকান চালান। গত বছর ৩০ অগাস্ট নিখোঁজ হয়ে যায় সে, স্থানীয় থানায় দায়ের হয় অপহরণের অভিযোগ। ১ সপ্তাহ পরে বাড়ি ফিরে আসে সে, বলে, স্থানীয় এক সম্পত্তির দালাল সহ ২ জন তাকে তুলে নিয়ে যায়, ১ সপ্তাহ ধরে গণধর্ষণ করে তাকে। তার অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ২ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ, পরে জামিন পেয়ে যায় তারা।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা লোকজন পাঠিয়ে ধর্ষণের মামলা তুলে নেওয়ার কথা বলে অভিযোগকারিণীর বাবা মাকে। বলে, মেয়ে বয়ান পাল্টালে ২০ লাখ টাকা দেবে। আগাম হিসেবে ৫ লাখ টাকা দিয়েও দেয়। ওই কিশোরী সবই জানতে পেরেছিল। বাবা মা বয়ান পাল্টাতে চাপ দিচ্ছি তার ওপর, কোনওমতেই সে রাজি না হওয়ায় রোজ ঝগড়া হত বাড়িতে।

শেষমেষ ১০ তারিখ বাবা মা আদালতে গেলে মেয়েটি বিছানার তলা থেকে ঘুষের টাকা নিয়ে সোজা চলে আসে পুলিশে। তাকে একটি হোমে পাঠানো হয়েছে।