নয়াদিল্লি: ৫০০, ১০০০ টাকার নোট বাতিল হওয়ার পর ৮ নভেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া হিসাববহির্ভূত টাকার কথা অ্যাকাউন্টের মালিক নিজে আয়কর বিভাগকে জানালে জরিমানা ও কর মিলিয়ে দিতে হবে ৫০ শতাংশ।
কিন্তু কেউ যদি অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া হিসাববহির্ভূত টাকার কথা নিজে না বলেন এবং আয়কর হানায় ধরা পড়েন, তাহলে কালো টাকার ওপর কর ও জরিমানা মিলিয়ে দিতে হবে ৮৫ শতাংশ। তার মধ্যে ৭০ শতাংশ কর ও ১৫ শতাংশ জরিমানা। কালো টাকার কারবারীদের বেআইনি অর্থ আইনসিদ্ধ করার আরও একটি সুযোগ দিতে আয়কর আইনে সংশোধন ঘটাতে একটি বিল সোমবার সংসদে পেশ করেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তাতেই এই প্রস্তাব রয়েছে।
কালো টাকা সাদা করার এই সুযোগের পাশাপাশি কালো টাকার মজুতদারদের আরও সুবিধা পাওয়ার সুযোগ আছে এই বিলে। বিলে বলা হয়েছে, কর ও জরিমানা মিলিয়ে ৫০ বা ৮৫ শতাংশ টাকা দিতে হবে না কালো টাকার মালিককে, যদি তিনি প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনা-২০১৬- আওতায় ঘোষণা করেন।
কালো টাকার কথা নিজে জানালে যেখানে ৫০ শতাংশ কর ও জরিমানা লাগার কথা, সেখানে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার আওতায় এলে কর দিতে হবে ৩০ শতাংশ। ৭০ শতাংশ থাকবে মালিকের।
আর কালো টাকার কথা নিজে না জানালে কর ও জরিমানা মিলিয়ে যেখানে ৮৫ শতাংশ লাগার কথা, সেখানে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনার আওতায় ঘোষণা করলে দিতে হবে মাত্র ৫০ শতাংশ। ৫০ শতাংশ থাকবে মালিকের।
বিলে আরও বলা হয়েছে, যাঁদের হিসাব বহির্ভূত আয় রয়েছে তাঁদের বাড়তি আয়ের ২৫ শতাংশ প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ তহবিলে ৪ বছরের জন্য জমা রাখা বাধ্যতামূলক। তাও আবার কোনও রকম সুদ ছাড়া।
এখানেই সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধীরা।
জমা পড়া টাকার সঙ্গে আয়ের অসঙ্গতি পেলে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল কেন্দ্র। সেখানে এখন কেন ৫০-৮৫-তেই আটকে গেল সরকার? কালো টাকার মালিকদের এত সুযোগ কেন দিচ্ছে কেন্দ্র? কালো টাকা উদ্ধারে কড়া মনোভাব নিচ্ছে, না কি, কালো টাকার কারবারিদের টাকা সাদা করার সুযোগ করে দিচ্ছে সরকার? প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
যারা স্কিমে বাতিল হওয়া ৫০০, ১০০০-এর নোটে হিসাব বহির্ভূত আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত আমানত করবেন, তাঁরা পুরোপুরি স্বস্তিতে থাকতে পারবেন না। আয়কর কড়া নজর রাখবে কোনও পরিবারের সদস্যদের নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বাতিল হওয়া নোটে যে আমানত জমা পড়ল, ছোট অঙ্কের হলেও, তা হিসাববহির্ভূত আয় কিনা। এক অফিসার বলেছেন, আড়াই লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড় মিলবে বটে, কিন্তু টাকাটা ভেঙে দিয়ে পরিবারের চারজনের নামে জমা করা হল কিনা, সেটাও দেখা হবে।
গত ১০ নভেম্বর কেন্দ্রীয় রাজস্ব সচিব বলেছিলেন, ১০ নভেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত আড়াই লক্ষ টাকার বেশি জমা পড়া সব নগদ অর্থের ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন, তার সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। সেইমতো ব্যবস্থা নেবে আয়কর।