ইন্দোর: নাক নিয়ে খুব দুঃখ ছিল ১২ বছরের অরুণ প্যাটেলের। ১ মাস বয়সে ইঞ্জেকশনের সাইড এফেক্টে নাকটা প্রায় উধাও হয়ে যায় তার। স্কুলে বন্ধুরা খ্যাপাত, রাস্তাঘাটেও নানা কথা শুনতে হত। উজ্জ্বয়িনীর এই ষষ্ঠ শ্রেণির ছেলেটি রাস্তা দিয়ে হাঁটত মাথা নীচু করে, আয়নায় তাকাতে সাহস হত না। স্কুলে ছেলেমেয়েরা হাসাহাসি তো করতই, ভয়ও পেত তাকে। এই পরিস্থিতি থেকে অরুণকে উদ্ধার করলেন ইন্দোরের একদল চিকিৎসক। অরুণের মুখে নাক বসিয়ে তাকে স্বাভাবিক চেহারা ফিরিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।


নাক পছন্দসই করে তুলতে চিকিৎসকরা যে রাইনোপ্লাস্টি করেন, এ ক্ষেত্রে তা সম্ভব ছিল না, কারণ, অরুণের মুখে নাকই ছিল না মোটে। তাই অপারেশন হয় চার ধাপে, টানা এক বছর ধরে। প্রথম ধাপে অরুণের কপালে স্পেশাল সিলিকন টিস্যু এক্সপ্যান্ডার বসানো হয়, তাতে দেওয়া হয় এক ধরনের রাসায়নিক, যাতে কপালের টিস্যুগুলি ছড়িয়ে যেতে পারে। দ্বিতীয় ধাপে, তার বুকের নীচের অংশ থেকে কার্টিলেজ নিয়ে কপালে তৈরি হয় কৃত্রিম নাক। ৩ মাস ধরে অরুণের কপালেই তার নাক ছিল, যাতে সেখানেও স্বাভাবিক রক্ত চলাচল করতে পারে, টিস্যুগুলি কাজ করতে শুরু করে। এরপর কপাল থেকে ওই নাক সরিয়ে তা বসিয়ে দেওয়া হয় ঠিক জায়গায় অর্থাৎ দু’চোখের মাঝখানে। চতুর্থ ধাপে কপালের যেখান থেকে নাক তোলা হয়েছে, সেই জায়গাটি স্বাভাবিক করে দেওয়া হয়।

সার্জেনদের নেতৃত্বে থাকা চিকিৎসক অশ্বিনী দাস জানিয়েছেন, ১ বছর ধরে গোটা প্রক্রিয়াটির ওপর কড়া নজরদারি চালাচ্ছিলেন তাঁরা, যদি কোনও অস্বাভাবিকত্ব ধরা পড়ত, তৎক্ষণাৎ অপারেশন করে তা স্বাভাবিক করা হত।

যাই হোক, এখন অরুণ খুব খুশি। অন্যদের মত এবার মাথা উঁচু করে স্কুলে যাবে সেও। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ইচ্ছেমত চুল আঁচড়াতে পারবে।