নয়াদিল্লি:নয়াদিল্লি ও মুম্বই: সেনা তহবিলে স্বতঃস্ফূর্ত, স্বেচ্ছা অনুদানই কাম্য। কারুর ঘাড় ধরে এ ধরনের অনুদান আদায় কাঙ্খিত নয় বলে মন্তব্য করেছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রিকর। এবার একই সুর কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বেঙ্গাইয়া নাইডুর গলাতেও। পাক শিল্পী ফাওয়াদ খান অভিনীত 'অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল' নিয়ে বিতর্কের জেরে সেনা ত্রাণ তহবিলে প্রযোজকদের ৫ কোটি টাকার অনুদানের শর্তে সিনেমাটির নির্বিঘ্ন মুক্তির বিষয়ে রাজি হয়েছিল মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস)। সরাসরি এমএনএস-এর নাম না করেই 'এটা প্রশংসনীয় কাজ নয়' বলে মন্তব্য করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এবার বেঙ্কাইয়া এমএনএসের এ ধরনের শর্ত আরোপ সম্পূর্ণ ভুল বলে মন্তব্য করলেন। উল্লেখ্য, এই বিষয়ে আগেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সেনাবাহিনীও।

নৌ কমান্ডারের এক সম্মেলনে পর্রীকর বলেন, তহবিলে টাকা দানের বিষয়টি একবারেই স্বেচ্ছামূলক। কারও ঘাড় ভেঙে টাকা নেওয়ার একেবারেই পক্ষপাতী নই আমি। তিনি বলেন, যাঁরা শহিদ জওয়ানদের পরিবারকে সাহায্য করতে চান, তাঁরা করতেই পারেন। কিন্তু এটা বাধ্যতামূলক করা একেবারেই উচিত নয়। এই নিয়ে নয়া স্কিমও চালু করেছে সরকার। যাতে প্রতিটি শহিদ পরিবার সমানভাবে সাহায্য পান।

প্রসঙ্গত, উরি হামলার পর দেশে পাক শিল্পীদের বয়কটের ডাক দেয় মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা। পাকিস্তানি অভিনেতা ফাওয়াদ খান অভিনীত কর্ণ জোহরের ছবি ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ মুক্তি পেতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দেয় তারা। মাল্টিপ্লেক্সগুলিতে ভাঙচুর করা হবে বলে হুমকি দেয়। সেই সঙ্গে পাক অভিনেতাদের নিজেদের দেশে ফিরে যেতেও বলে। সিঙ্গেল থিয়েটারগুলি জানিয়ে দেয়, তাঁদের হলে দেখানো হবে না ‘অ্যায় দিল…’। এই সমস্যার জট কাটাতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীশ এবং এমএনএস-এর প্রধান রাজ ঠাকরের সঙ্গে দেখা করেন ছবির প্রযোজক কর্ণ জোহর, প্রডিউসার গিল্ডের প্রেসিডেন্ট মুকেশ ভট্ট। প্রযোজকরা কথা দেন, ভবিষ্যতে পাকিস্তানি শিল্পীদের নিয়ে আর কাজ করবেন না। যে সমস্ত প্রযোজক সই করে পাকিস্তানি শিল্পীদের ছবিতে নিয়েছেন, তঁদের সেনা ত্রাণ তহবিলে ৫ কোটি টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেয় এমএনএস।

এমএনএসের চাপের সামনে এভাবে নতিস্বীকারের জন্য বিভিন্ন মহলে মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা হয়। যদিও মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, গণতান্ত্রিক সরকার অনেক সময় তো উগ্রপন্থী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গেও কথা বলে। গিল্ডের সঙ্গে এমএনএসের বৈঠকে অনুদানের ব্যাপারটিতে তিনি আপত্তি জানিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন ফড়নবীশ।

বেঙ্গাইয়া বলেছেন, এ ধরনের অনুদান চাওয়ার প্রস্তাব সম্পূর্ণ ভুল। এক্ষেত্রে সরকারের কোনও সম্পর্ক নেই। এমএনএস-এর প্রস্তাবের সঙ্গে তাঁরা সহমত নন। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীও ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন যে, এই প্রস্তাবের সঙ্গে তিনি যুক্ত নন। অন্য কোনও দল এই প্রস্তাব দিয়েছে।