মুঙ্গের ভোট উৎসবের মাঝেই থমথমে মুঙ্গের। বৃহস্পতিবারও একধিক পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া, সরকারী আধিকারিকদের অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি বর্তমানে এতটাই উত্তপ্ত যে তা আয়ত্তে আনতে এবার মাঠে নেমেছে নির্বাচন কমিশন। বিহারের জেলাটির জেলাশাসক (ডিএম) ও পুলিশ সুপারকে (এসপি) অপসারিত করেছে তারা। সঙ্গে তদন্ত কমিটি গড়ে সাত দিনের মধ্যে গোটা ঘটনার বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে। কিন্তু তাতেও যেন বিক্ষোভ-গণ্ডগোল থামার কোনও লক্ষ্মণ নেই।


২৬ অক্টোবর রাতে দুর্গাপুজোর প্রতিমা বিসর্জনের সময়ে যাবতীয় ঘটনাক্রমের সূত্রপাত। পুলিশের বিরুদ্ধে নির্বিচারে লাঠি এমনকি গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে, যে ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে একজনের। বিচারের দাবি জানিয়ে এসপি ও ডিএম-এর অপসারণ চেয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছিল একদল বিক্ষোভকারী, যা হঠাৎ ভয়ংকর আকার ধারণ করে। মুঙ্গেরের সাব ডিভিশানাল ও এসপি-র অফিস পুড়িয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। পোড়ানো হয় একাধিক পুলিশের গাড়ি।

যে ঘটনা দেখেই মুঙ্গেরের আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে খাপ্পা নির্বাচন কমিশন এদিন অপসারিত করে সেখানকার ডিএম রাজেশ মিনা ও এসপি লিপি সিংহকে। নতুন পদাধিকারীদের শীঘ্রই নিয়োগের কথাও জানায় তারা। পাশাপাশি মগধের ডিভিশনাল কমিশনার অসঙ্গা চৌবার নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সাতদিনের মধ্যে গোটা ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্টও চেয়ে পাঠায় নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপের পরও কিন্তু পরিস্থিত এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এদিন অপসারিত এসপি লিপি সিংহের শাস্তির দাবীতে বিক্ষোভের মাঝে কোতয়ালি, কাশিম বাজার পুলিশ স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুদ্ধ জনতা। পুলিশকে শূন্যে গুলিয়ে চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়। এদিকে মুঙ্গের শহরের রাজীব চকে রাস্তার টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান বিক্ষোভকারীরা। থমথমে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে গোটা মুঙ্গের জুড়ে টহল দিচ্ছে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী।

এদিকে অপসারিত এসপি লিপি সিংহকে ঘিরে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোরও। তিনি জেডিইউয়ের রাজ্যসভার সাংসহ আরসিপি সিংহের কন্যা। তাই ক্ষমতাসীন বিহারের শাসককে কাঠগড়ায় তুলে মুঙ্গেরের পুলিশি বর্বরতাকে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা টেনেছে আরজেডি।

মুঙ্গের ছাড়াও জামালপুর, তারাপুরের ভোটে যে ইস্যু প্রভাব পেলতে পারে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তিন বিধানসভা কেন্দ্রেই আগের বারের থেকে কম ভোট পড়েছে এবারে। এদিকে গোটা ইস্যুতে নীতিশের দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ানোর চেষ্টা করে বেগুসরাইয়ের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং বলেছেন, অভিযুক্তদের যত উঁচু পর্যন্তই যোগাযোগ না কেন, তারা শাস্তি পাবেই।