নয়াদিল্লি: বিজেপির অভিযোগ গ্রহণ করে মডেল আচরণবিধি ভাঙার ব্যাপারে রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে গুজরাতের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার বি বি সোয়েইনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানাল নির্বাচন কমিশন। রাহুলকে প্রাথমিক ভাবে নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে কমিশন। ১৮ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে তাঁকে।
আগামীকাল গুজরাতের দ্বিতীয় ও শেষ দফার নির্বাচনের আগের দিন বুধবার গুজরাতি চ্যানেলে কংগ্রেস সভাপতির সাক্ষাত্কার সম্প্রচারিত হওয়ায় কমিশনে যায় বিজেপি। তাদের বক্তব্য, ভোটগ্রহণের ৪৮ ঘন্টা আগে যে কোনও সময়ের মধ্যে এ ধরনের ইন্টারভিউ দেখানো হলে সেটাও কার্যত ভোটপ্রচারই। কিন্তু কমিশনের বিধিতে এর অনুমোদন নেই। তাই বিধিভঙ্গেরর দায়ে পদক্ষেপ করা হোক রাহুলের বিরুদ্ধে। সেই বক্তব্য মেনে নিয়ে কমিশন টিভি চ্যানেলগুলিকেও অবিলম্বে এ ধরনের সাক্ষাত্কার দেখানো বন্ধ করতে বলে। বিজেপির অভিযোগ পাওয়ার পর প্রথমে গুজরাতের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার জানিয়েছিলেন, তাঁরা ওই সাক্ষাত্কারের ডিভিডি জোগাড় করেছেন, কোথায় কোথায় বিধিভঙ্গ করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।







পরে বিবৃতি দিয়ে কমিশন জানায়, এ ধরনের সাক্ষাত্কার সম্প্রচার ১৯৫১-র জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১২৬ (৩) ধারায় 'নির্বাচনী বিষয়বস্তু'-র সংজ্ঞার মধ্যেই পড়ছে। ভোট হতে চলেছে, এমন সব জায়গায় এ ধরনের নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয় প্রচারের সময়সীমা শেষ হওয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে দেখানো হলে তাতে ওই আইনের ১২৬ (১) (বি) ধারা লঙ্ঘন করা হয়। কমিশনের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিষয়টি ভাল করে খতিয়ে দেখে যাঁরা বিধি ভেঙেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে গুজরাতের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে টিভি চ্যানেলগুলি ওই নির্বাচনী বিষয় দেখিয়ে ১২৬ (১) (বি) ধারা লঙ্ঘন করছে, তাদেরও এ ধরনের সম্প্রচার অবিলম্বে বন্ধ করতে বলা হচ্ছে।

ইন্টারভিউয়ে রাহুল দাবি করেন, গুজরাতে বিধানসভা নির্বাচনে এক তরফাভাবে জিতবে কংগ্রেস। ভোটের ফলাফলে চমকে যাবে বিজেপি। তাঁর দাবি, বিজেপির ওপর ক্ষুব্ধ গুজরাতের মানুষ। এই ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটবে ভোট বাক্সে।  রাহুল বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ হয়েছেন।  গত তিন-চার মাসে তিনি গুজরাতের মানুষের মুড লক্ষ্য করছেন। বিজেপি বিরোধিতার উত্তাপ দিনদিন বাড়ছে।

সাসপেন্ড হওয়া কংগ্রেস নেতা মণিশঙ্কর আয়ারের নীচ মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, রাজনীতির আলোচনার বিষয়বস্তুর বদল হওয়া উচিত। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আদর্শের পার্থক্য রয়েছে। কিন্তু তা বলে অভব্য কোনও কথা বলা উচিত হয়। রাজনৈতির আলোচনায় কথাবার্তা পরিচ্ছন্ন হওয়া দরকার। আমি মণিশঙ্কর আয়ারকে বলেছি, এ ধরনের ভাষা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবহার করা উচিত নয়। যদি প্রধানমন্ত্রী খারাপ কথা বলেন, তাহলেও না।

পাকিস্তানের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহর বৈঠককে  গুজরাতে ভোটের প্রচারের হাতিয়ার করেছিলেন মোদী। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেন রাহুল। বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখে এ ধরনের মন্তব্য শোভা পায় না।