নয়াদিল্লি: মাদক পাচার চক্রে জড়িত প্রাক্তন বলিউড অভিনেত্রী মমতা কুলকার্নি?  মমতার স্বামী  ভিকি গোস্বামীকে আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালান চক্রের কিংপিন বলে আগেই এনেছে পুলিশ। এবার সরাসরি মমতার নামও জড়াল। তাঁকেও এই চক্রের সদস্য বলে অভিযুক্ত করল ঠাণে পুলিশ। তাদের দাবি, কেনিয়ায় বসে দুজনে মিলে মাদক কারবার চালান বলে স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে। তাঁদের ২ হাজার কোটি টাকার মাদক পাচারের কারবার রয়েছে।  এই মামলায় এপর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের জেরা করেই মমতা ও তাঁর স্বামীর জড়িত থাকার কথা জানতে পারেন তদন্তকারীরা।

 

ঠাণে পুলিশের তরফে পরমবীর সিংহ বলেছেন, নতুন পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মমতা কুলকার্নিকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে।  আমরা তাঁর নামে রেড কর্নার নোটিস জারি করতে সিবিআইয়ের মাধ্যমে ইন্টারপোলের কাছে অনুরোধ পাঠাচ্ছি। তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, তিনি কোথায় কী টাকা খাটাচ্ছেন, সেসব খতিয়ে দেখছি আমরা। তাঁর স্বামী ভিকি গোস্বামী ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত হয়েছেন।

 



 

মমতা, ভিকির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বলিউডের আরও কিছু লোকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে বলেও জানিয়েছে থানে পুলিশ।

এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে সাড়ে ১৮ টন এফিড্রিন, আড়াই টন অ্যাসেটিক অ্যানহিড্রাইড বাজেয়াপ্ত করে তারা। দুটিই নিষিদ্ধ মাদক। তদন্তে বেরিয়ে আসে যে, ভিকিই পুরো চক্রের মাথা। কেনিয়া পুলিশ তাঁকে একটি মামলায় গ্রেফতার করেছিল। এখন তিনি জামিনে বাইরে  রয়েছেন। তাঁকে কেনিয়া থেকে শীঘ্রই প্রত্যর্পণের মাধ্যমে ভারতে নিয়ে আসা হবে। যদিও ভিকির অভিযোগ, তাঁকে তাদের হাতে তুলে দিতে ভারতকে চাপ দিচ্ছে আমেরিকা। আমেরিকার ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) তাঁকে অপহরণ করতে পারে, এই আশঙ্কায় ভারতে আসতে নারাজ ভিকি।

এমনকী মমতা তাঁর স্ত্রী, এ কথাও অস্বীকার করে ভিকির দাবি, মমতা স্রেফ তাঁর এক শুভানুধ্যায়ী।

 

রমরমিয়ে চলা মাদক পাচারের বিরাট চক্রের হদিশ মেলে সম্প্রতি সিপরেন চিনাসা নামে এক নাইজিরিয় নাগরিক ৫০০ কেজি এফিড্রিন সমেত গ্রেফতার হওয়ার পর। চিনাসা পুলিশকে শোলাপুরে মাদক তৈরির ডেরায় নিয়ে যায়। সে খোঁজ দেয় সাগর পাওয়ালে, ময়ূর সুখদারে নামে আরও দুজনের। দু কেজি এফিড্রিন রাখার অভিযোগে গ্রেফতার করা তাদের।  তারপর সাড়ে ৫ কেজি এফিড্রিন পাউডার সমেত ধরা পড়ে ধনেশ্বর স্বামী নামে আরেকজন। গ্রেফতার হয় শোলাপুরের মাদক তৈরির কারখানার ম্যানেজারও। তাদের জেরা করে একটি কোম্পানির কথা জানতে পারে পুলিশ। মনোজ জৈন, পুনিত সিরিঙ্গি, প্রদীপ সিংহ গিল নামে তিনজন ওই কোম্পানির লোক। তদন্তে বেরয়, ওদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ আছে কেনিয়ার মাদক মাফিয়া কিং ভিকির। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওদের পরিকল্পনা ছিল কেনিয়ার মোম্বাসায় একটি ইউনিট বসাবে যেখানে এফিড্রিন থেকে তৈরি হবে মেথামফেটামাইন, যার দাম আন্তর্জাতিক  বাজারে এফিড্রিন থেকে অনেক  বেশি।