নয়াদিল্লি: করোনা অতিমারিকে রুখতে একমাত্র রাস্তা যে ভ্যাকসিন, সেটা এতদিনে বুঝে নিয়েছে গোটা বিশ্ব। বিভিন্ন সংস্থা জোরকদমে চালাচ্ছে তা তৈরি করার কাজ। অনেকেরই দাবি, তারা রয়েছেন একেবারে শেষ পর্যায়ে।


ভ্যাকসিন ভারতের বাজারে পৌঁছে গেলেও চিন্তামুক্ত হওয়ার জায়গা নেই। বিশেষজ্ঞদের ভাবাচ্ছে এদেশে কোল্ড স্টোরেজের অভাব। কোভিডের ভ্যাকসিনকে সক্রিয় রাখতে প্রয়োজন পড়ে মাইনাস ৭০ থেকে ৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। যা কার্যত অমিল ভারতে।

ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল এন কে গঙ্গোপাধ্যায় চিন্তার সুরে বলেছেন, ‘মাইনাস ৭০ থেকে ৮০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের ফ্রিজার আমেরিকা বা ইউরোপের একাধিক হাসপাতালেও নেই। তাই শুধু ভ্যাকসিন পৌঁছনোই নয়, সেটা সংরক্ষণের জন্য গোটা ভারতে প্রবল কার্যকরী কোল্ড স্টোরেজ বানানোটাও একান্ত প্রয়োজন।’

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক আগামী বছরের জুলাই মাসের মধ্যে দেশের ২৫ কোটি জনগণকে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। ভ্যাকসিনেশনে ভারতের আগের ইতিহাসও উজ্জ্বল। তবে করোনার ভ্যাকসিনকে সক্রিয় রাখতে প্রয়োজনীয় কোল্ড স্টোরেজ নিয়ে চিন্তায় সকলেই।

শুধু কোল্ড স্টোরেজই নয়, গোটা ভারতজুড়ে ভ্যাকসিন পৌঁছনো থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ ঘাটতির সঙ্গে লড়াই চালানোর মতো একাধিক সমস্যা নিয়েও ভাবতে হচ্ছে।

সম্প্রতি ৯০ শতাংশ সফল বলে দাবি করা ফাইজারের ভ্যাকসিন রাখতে প্রয়োজন হয় মাইনাস ৭০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। ডিসেম্বরের শেষে ভারতে আসার কথা থাকা মর্ডেনা ভ্যাকসিনকে সক্রিয় রাখতে অবশ্য লাগে মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। কিন্তু তাও যে সঠিক মাত্রায় অমিল ভারতে। আইমিএমআরের এপিডেমোলজি ও কমিউনিকেবল ডিজিসেজ-র প্রাক্তন প্রধান ললিত কান্ত জানান, ভারতে সাধারণত মাইনাস ২ থেকে ৮ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রায় ভ্যাকসিন রাখার ব্যবস্থা রয়েছে।

ভ্যাকসিন তৈরির সঙ্গেই তাই অতি সক্রিয় কোল্ড স্টোরেজ বানানোটাও অত্যন্ত জরুরী বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সঙ্গে আবার তাদের চিন্তা কার্যকারিতা নিয়েও। কারণ, আপাতত তুলনামূলক সুস্থ ও তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের শরীরেই হচ্ছে ভ্যাকসিনের কার্যকারিতার প্রয়োগ। সেটা সবার শরীরেই সমান কার্যকরী হবে কি না তা নিয়েও এখনও নেই কোনও নিশ্চয়তা।