মথুরা: বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহারে তো বটেই, উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও রাজ্যের কৃষকদের ঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি বিভিন্ন জনসভায় বলেছিলেন, বিজেপি সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভা বৈঠকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ীই উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার রাজ্যের প্রায় এক লক্ষ্য প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকদের ৩৬,৩৫৯ কোটি টাকার ঋণ মকুব করেছে।

সরকারের এই সিদ্ধান্তে রাজ্যের কৃষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গিয়েছে। বোরপা গ্রামের কৃষক কেদার সিংহ বলেছেন, রাজ্য সরকারের কাছে এটা বড় উপহার হতে পারে কিন্তু কৃষকদের কাছে এটা একটি ললিপপ ছাড়া অন্য কিছু নয়।

মথুরা তেহশিলের দামোদরপুরা গ্রামের প্রান্তিক কৃষক তথা সরপঞ্চ দেবী সিংহ বলেছেন, তাঁদের সমস্ত ঋণ মুখ্যমন্ত্রী মকুব করে দেবেন বলে আশা ছিল। গোবর্ধন তহশিলের গোসানা গ্রামের কৃষক রাজন সিংহর অভিযোগ, ভোটের প্রচারের সময় থেকেই কৃষকদের 'ধোঁকা' দেওয়া হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের ঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু কারা এতে উপকৃত হবেন, তা স্পষ্ট করে বলেননি। এখন বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্তকে 'চোখে ধুলো দেওয়া'র সামিল বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

মথুরা জেলার শ্যাম সিংহ ও রোহটান সিংহও সরকারের সিদ্ধান্তে খুশি নন। সরকার ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষকে 'বেঞ্চমার্ক' হিসেবে স্থির করায় তাঁরা হতাশা ব্যক্ত করেছেন। আর এক কৃষক দীন দয়াল গৌতম এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ মকুবের সিদ্ধান্তকে সমুদ্রে এক ফোঁটা জলের সামিল বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় গত তিন বছর কৃষকরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

যদিও জাভারা তহশিল মান্ট গ্রামের কৃষক কুশল প্রতাপ সিংহ সরকারের ঋণ মকুবের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এর ফলে ঋণের দায় থেকে মুক্ত হবেন। তাঁর কথায়, ক্ষুদ্র কৃষকদের ঋণ সাধারণত ১ লক্ষ টাকা ছাড়ায় না।

নাজুলি তহশিল মান্ট গ্রামের লোকেন্দ্রর ব্যাঙ্কে কোনও ঋণ নেই। তাঁর কথায়, গত বছর যাঁরা ঋণ নিয়েছেন, সেই কৃষকরা উপকৃত হবেন। কিন্তু এর আগে যাঁরা ঋণ নিয়েছিলেন তাঁদেরও কেন স্বস্তি দেওয়া হল না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।