নয়াদিল্লি: ৯ দিনে পা দিল কৃষকদের দিল্লি চলো অভিযান। এরই মধ্যে তিন কৃষি আইনেই পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছে মোদি সরকার। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়েও নতুন আইনের সম্ভাবনা।
এদিকে, এই আন্দোলনে বিরোধীদলগুলিকে সামিল করার চেষ্টা চালাচ্ছে শিরোমণি অকালি দল। আগামীকাল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রবিবার উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে দেখা করবেন অকালি দলের প্রতিনিধিরা। আলোচনা বিজেডি, এনসিপি, সমাজবাদী পার্টির সঙ্গেও। আজ এ নিয়ে কর্মসূচি ঘোষণার সম্ভাবনা তৃণমূলের।
গতকাল ৭ ঘণ্টার ম্যারাথন বৈঠকের পরও বরফ গলেনি। কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় ছিলেন আন্দোলনকারীরা। এর আগে ১ ডিসেম্বর বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। বৃহস্পতিবারের বৈঠকও নিষ্ফলা। ৫ ডিসেম্বর ফের বৈঠকে ডাক আন্দোলনকারীদের।
এদিন বিজ্ঞান ভবনে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর, পঞ্জাব থেকে বিজেপি সাংসদ ও মন্ত্রী সোম প্রকাশ এবং রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের উপস্থিতিতে বৈঠক হয় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে। কিন্তু, নিট ফল জিরো।
কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর বলেন, সরকার আলোচনা চালাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, অবশ্যই একটা সমাধানে পৌঁছব। আমি কৃষকদের অনুরোধ করছি, তাঁরা যাতে আন্দোলন শেষ করুন, যাতে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের ফলে দিল্লিবাসীর কোনও সমস্যা না হয়।
সরকার যাই বলুক, আন্দোলনকারীরা কিন্তু ৩টি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে অনড়। আজাদ কিষাণ সংঘর্ষ কমিটির নেতা হরজিন্দর সিং টন্ডা বলেন, বর্তমান আইন ভুলে ভরা। পরের বৈঠকে সরকারের ওপর চাপসৃষ্টি করা হবে। আইন প্রত্যাহার করতে হবে সরকারকে।
বিজ্ঞান ভবনে বৈঠকে যাওয়া আন্দোলনকারী কৃষক প্রতিনিধিদের জন্য মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছিল মোদি সরকার। কিন্তু, তাঁরা তা প্রত্যাখ্যান করেন।
মোদি সরকারের নতুন কৃষি আইনের বিরোধিতায় লাগাতার আন্দোলন চলছে দিল্লির উপকণ্ঠে। গাজিয়াবাদ-দিল্লি ২৪ নম্বর জাতীয় সড়ক, উত্তরাখণ্ড-দিল্লি ৯ নম্বর জাতীয় সড়ক, দিল্লি-হরিয়ানার সিঙ্ঘু সীমানায় চলছে অবস্থান-বিক্ষোভ।
উত্তর ভারতের প্রবল ঠাণ্ডা আর করোনার আতঙ্ক উপেক্ষা করেই কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। প্রতিদিন ভিড় বাড়ছে আন্দোলনস্থলে।
চড়া হচ্ছে বিরোধিতার সুর। বিজেপির একদা বন্ধু অকালি দলের প্রধান প্রকাশ সিং বাদল তাঁর পদ্মবিভূষণ পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছেন। মুখ খুলেছেন বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও।
আন্দোলনের সমর্থনে ট্যুইটারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, আমি কৃষকদের জীবন-জীবিকা নিয়ে উদ্বিগ্ন। কেন্দ্রের উচিত কৃষক-বিরোধী আইন প্রত্যাহার করা। দ্রুত তা না হলে, রাজ্য ও দেশজুড়ে আমরা বিক্ষোভ দেখাব। আমরা প্রথম থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছি।
বৃহস্পতিবার কৃষি আন্দোলনের সমর্থনে কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখায় বাম ও কংগ্রেস।