সঙ্গে তাদের দাবি, নিশ্চিত করতেই হবে নূন্যতম সহায়ক মূল্য (MSP) প্রদান। কেউ এমএসপি না দিতে চাইলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার রাস্তা খুলতে হবে বলেও কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়ালেন কৃষকরা। নিজেদের দাবিতে অনড় থেকেই কৃষকদের এক প্রতিনিধিদল সিংঘু সীমানা থেকে আলোচনায় যোগ দিতে অংশ নিয়েছে।
আজকের বৈঠকের আগে গতকালই ৪০টি কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করা সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা কেন্দ্রের কাছে চিঠি লিখে জানিয়েছিল, তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার ও এমএসপি দেওয়ার বিষয়টি কেন্দ্র নিশ্চিত না করলে আলোচনায় বসা মূল্যহীন। কৃষকদের সঙ্গে একাধিকবার ইতিমধ্যে আলোচনায় বসা কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী সোম প্রকাশ বলেছেন, 'আশা রাখি আজ সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসবে। এমএসপি নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে খোলামনে আলোচনা করতে সরকার তৈরি।'
গত সেপ্টেম্বরে কেন্দ্রীয় সরকার তিনটি কৃষি আইন জারি করে। আইনের ফলে আখেরে কৃষকদের সুবিধা হবে বলে বারবার প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করলেও কৃষকরা সেই দাবি মানতে নারাজ। তারা তিন আইন প্রত্যাহার ও এমএসপি নিশ্চিত করার দাবিতে দিল্লি সীমানায় জড়ো হয়ে আন্দোলন-বিক্ষোভ চালাচ্ছেন।
আজ সেই আন্দোলনের ৩৫তম দিন। এর আগে কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমার, রেল ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল বারবার কৃষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসলেও বুঝিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্র তাদের অবস্থান থেকে সরছে না। একই জায়গায় কৃষকরাও। তারাও অনড় তাদের আইন প্রত্যাহারের দাবিতে।
এর মাঝে কেন্দ্র নতুন করে কৃষকদের আলোচনায় ডাকায় আলোচনায় কিছুটা বরফ গলতে পারে বলেই প্রত্যাশা বিভিন্ন মহলে। যদিও কৃষকরা খুব একটা আশাবাদী নন। পঞ্জাবের কিষাণ মজদুর সংঘর্ষ কমিটির যুগ্ম সচিব সুখবিন্দর সিং সাবরার মতে, ‘আলোচনায় গেলেও আজ কোনও সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসবে বলে প্রত্যাশা রাখছি না।'
একাধিক বিরোধী দল এর মাঝে কৃষকদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছে। যে ইস্যুতে বারবার বিরোধীদের সাহায্যপ্রাপ্ত বলে কৃষক আন্দোলনকে কেন্দ্রীয় সরকার তকমা দিতে চাইলেও কৃষকরা নিজেদের দূরত্ব বজায় রেখেছেন সমস্ত রাজনৈতিক দলের থেকেই। আজও এক সাক্ষাৎকারে তেমনই ইঙ্গিত করেছেন রাজনাথ সিংহ। তবে হ্যাঁ, না-র গন্ডি টপকে সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসবে বলেই আশাপ্রকাশ করেছেন দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
এর মাঝেই ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা রাকেশ তিকায়েত বলেছেন, ‘যে কোনও দেশে শক্তিশালী বিরোধীদের উপস্থিতি প্রয়োজন, যাদেরকে সরকার সমীহ করে চলবে। এদেশে দূর্ভাগ্যবশত তেমনটা নেই। বিরোধী দলগুলির উচিত ছিল কৃষকদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাস্তায় থেকে আন্দোলনের জোর বাড়ানোর।’