নয়াদিল্লি: যেভাবে কেন্দ্রীয় সরকার বিক্ষোভরত কৃষকদের সঙ্গে নয়া কৃষি আইন নিয়ে বোঝাপড়ায় আসার চেষ্টা করছে, তাতে আমরা অত্যন্ত হতাশ। এই আইন আপাতত স্থগিত রাখুন, না হলে আমরা তা করব। এই ভাষাতেই কৃষক বিক্ষোভের ওপর শুনানিতে মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট।

নতুন কৃষি আইনের বিরোধিতায় এক গুচ্ছ আবেদন জমা পড়েছে শীর্ষ আদালতে। শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে বলেছেন, যেভাবে এই তিন আইনের বিরোধিতায় দিল্লি সীমানায় দীর্ঘদিন ধরে কৃষক আন্দোলন চলছে, তার দায় কেন্দ্রীয় সরকারকে নিতে হবে। আপনারা আইন আনছেন, আপনাদের এটা আরও ভালভাবে করা উচিত ছিল। আইনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়া এম এল শর্মা ১৯৫৫-র সংবিধান সংশোধনের প্রসঙ্গ ওঠান। জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, এই মুহূর্তে এত পুরনো সংশোধনের ওপর স্থগিতাদেশ আনা সম্ভব নয়। আমাদের আশঙ্কা, যে কোনও দিন বিরাট হিংসা দেখা দেবে। এই মুহূর্তে আইন প্রয়োগ করার ওপর জোর দেওয়ার দরকার নেই, আগে আলোচনা শুরু করুন। এ জন্য একটি কমিটি তৈরি করা হোক।

সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, বহু কৃষক সংগঠন এই আইন সুবিধেজনক বলে মনে করছে। জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, এমন কোনও সংগঠন আজ পর্যন্ত তাঁদের সামনে এসে এ কথা বলেনি। যদি বড় সংখ্যক মানুষ মনে করেন, এই আইনে লাভ হবে, তবে কমিটিকে সে কথা বলুন তাঁরা। কিন্তু এই আইন প্রয়োগ আপাতত বন্ধ রাখুন। না হলে আদালতকে তা করতে হবে। এ সময় আবেদনকারীর আইনজীবী হরিশ সালভে বলেন, শুধু আইনের বিতর্কিত অংশগুলির ওপর স্থগিতাদেশ জারি করা হোক। জবাবে প্রধান বিচারপরি বলেন, না, স্থগিতাদেশ জারি করতে হলে গোটা আইনের ওপরেই করতে হবে। কিন্তু এরপরেও কৃষক সংগঠনগুলি আন্দোলন জারি রাখতে পারে। তাঁরা জানতে চান, এরপর আন্দোলনকারীরা সাধারণ মানুষের জন্য রাস্তা ছাড়বেন কিনা?

জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল সুপ্রিম কোর্টকে বলেন, যদি আদালত দেখে, কোনও আইন ন্যূনতম অধিকার বা সাংবিধানিক অধিকার ভঙ্গ করছে, একমাত্র তখনই তার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করা সম্ভব। তা না হলে নয়।

প্রধান বিচারপতি বলেছেন, কেন্দ্র এই পরিস্থিতির সমাধান বার করতে অক্ষম হয়েছে। মানুষ আত্মহত্যা করছেন, বয়স্ক মানুষ, মহিলারা রাস্তার ওপর ধর্নায় বসে রয়েছেন। কৃষি আইন খতিয়ে দেখতে কমিটি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। যার যা বলার, তা কমিটির সামনে এসে বলতে হবে।