নয়াদিল্লি: আপাতত হচ্ছে না কেন্দ্র-কৃষক ষষ্ঠ দফার বৈঠক।
গতকাল রাতে অমিত শাহ এবং কৃষক নেতাদের মধ্যে হওয়া বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয় যে, আজ বুধবার সকাল ১১টার মধ্যে সরকারের তরফে লিখিত প্রস্তাব পাঠানো হবে।
এই প্রেক্ষিতে, কৃষক নেতারা জানিয়ে দেন, সরকারের প্রস্তাব পেলে তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রথমে আলোচনা হবে। সেই বৈঠক হবে দুপুর ১২টা নাগাদ সিংঘু সীমান্তে। সেখানে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার সকল ৪০ জন প্রতিনিধিই উপস্থিত থাকবে।
কৃষক সংগঠনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, আজ সকাল ১১টা নাগাদ কেন্দ্র-কৃষকের যে ষষ্ঠ দফার বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, তা আপাতত বাতিল করা হচ্ছে। কৃষক সংগঠন আরও জানিয়েছে, আগে ওই বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তার ওপর নির্ভর করছে কেন্দ্রের সঙ্গে ষষ্ঠ দফার আলোচনার ভবিষ্যৎ।
কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছে, আজ যে প্রস্তাব পাঠানো হবে, তাতে তিনটি কৃষি বিলে সংশোধনী আনা হবে। যদিও, আন্দোলনকারীরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, সংশোধনী নয়, তিনটি কৃষি বিল অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে কেন্দ্রকে।
কেন্দ্রের কৃষি বিলের বিরোধিতায় গতকাল ভারত বনধের ডাক দিয়েছিল কৃষক সংগঠনগুলি। ভারত বনধকে সমর্থন করে বিজেপি বিরোধী ১৬টি রাজনৈতিক দল। কংগ্রেস, তৃণমূল, বামপন্থী দলগুলি ছাড়াও সমাজবাদী পার্টি, আরজেডি, ডিএমকে, শিবসেনা, বিএসপি, আম আদমি পার্টি-ও কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছিল।
গত প্রায় এক সপ্তাহ ধরে দিল্লি-হরিয়ানা সীমান্তে কৃষক যেভাবে একটানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন, তাতে সাড়া পড়েছে দেশজুড়ে। মঙ্গলবার হঠাৎই এনিয়ে ময়দানে নামে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি। ট্যুইটে তারা দাবি করে, বিজেপির দখলে থাকা দিল্লি পুলিশ মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালকে গৃহবন্দি করেছে। কারণ সোমবার সিঙ্ঘু সীমানায় আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তিনি। এই মুহূর্তে তাঁর বাসভবনে কারও প্রবেশের অনুমতি নেই।
যদিও এই দাবি উড়িয়ে দেয় দিল্লি পুলিশ। উত্তর দিল্লির ডিসিপি অ্যান্টো আলফোনস জানিয়েছেন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে গৃহবন্দি করা হয়নি। তাঁর বাসভবনের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে মাত্র, যাতে আম আদমি পার্টির সঙ্গে অন্য কোনও দলের সংঘর্ষ না বাধে।
কেজরীবালের দল অবশ্য মোদি সরকারের অধীনস্থ দিল্লি পুলিশের দাবি মানতে নারাজ। তাদের অভিযোগ, ব্যারিকেড দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের সামনের অংশ ঘিরে ফেলা হয়েছে। পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সমস্ত কর্মসূচিও বাতিল করা হয়েছে।
তবে কংগ্রেস-সহ দিল্লির বিরোধী দলগুলি অবশ্য কটাক্ষের সুরে দাবি করছে, পঞ্জাবে ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে, নিজেকে কৃষক-দরদী হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন কেজরীবাল। তাই এতদিন পর কৃষক-ইস্যুতে ময়দানে নেমেছেন তিনি।