কোল্লাম: কেরলে মন্দির বিপর্যয়ের একদিন পর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের নেপথ্যে বেশ কিছু কারণ উঠে এসেছে। যেমন নিয়মকানুনের তোয়াক্কা করা বা বিস্ফোরক জমা করার আগে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা হয়নি। তেমনই নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এই বাজি প্রতিযোগিতা করা হয়েছিল বলে উঠে এসেছে।


বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ সুদর্শন কমল এদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, যে বাজি দিয়ে এখানে প্রতিযোগিতা হচ্ছিল, তার অধিকাংশেই নিষিদ্ধ রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। সম্ভবত, বাজি প্রস্তুতকারীরা ওই নিষিদ্ধ উপকরণ ব্যবহার করেছে। তিনি আরও জানান, প্রতিযোগিতা করার আগে যে সতর্কতা অবলম্বন করার কথা ছিল, তাও নেওয়া হয়নি।

এদিকে, কোল্লাম জেলা আধিকারিক জানান, প্রতিযোগিতাকে অনুমোদন দেওয়া বা না দেওয়ার জন্য তাঁর ওপর কোনও চাপসৃষ্টি করা হয়নি। এ শাইনামোল বলেন, আমি শুধু আমার কাজ করেছি। আমার ওপর কোনও চাপ ছিল না। তাঁর দাবি, অনুমতি দেওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া লাগে। তিনি জানান, কেউ বা কারা এই নিয়মের তোয়াক্কা না করে, বাজি প্রতিযোগিতা নিয়ে এগিয়ে যায়।

প্রসঙ্গত, কোল্লামের অতিরিক্তি জেলাশাসক শাহনাওয়াজ জানিয়েছেন, পুট্টিঙ্গল মন্দির কর্তৃপক্ষের সচিব জে কৃষ্ণণকুট্টি পিল্লাই তাঁর কাছে বাজি প্রতিযোগিতা আয়োজন করার অনুমতি চেয়েছিলেন। যা তিনি খারিজ করে দেন। তিনি বলেছেন, কেবলমাত্র প্রদর্শনী হলেও হয়ত তিনি অনুমতি দিতেন। কিন্তু প্রতিযোগিতা হওয়ার দরুন তিনি অনুমতি দেননি। এদিন শাহনাওয়াজ বলেন, তদন্ত করে খতিয়ে দেখতে হবে যে, নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কী করে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।

গতকালের মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইতিমধ্যে, আত্তিঙ্গলের কাছে একটি খামারবাড়ি থেকে প্রায় ১০০ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক পদার্থ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। উল্লেখ্য, এই খামারবাড়ির মালিক জনৈক উমেশের বাবা এই প্রতিযোগিতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন। ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কেরল সরকার।

আপাতত এই ঘটনায় ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। এর মধ্যে মন্দির কর্তৃপক্ষের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য যেমন রয়েছেন, তেমনই রয়েছেন বাজির ঠিকাদাররা। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ (হত্যার চেষ্টা), ৩০৮ (অনিচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টা) ধারা এবং বিস্ফোরক আইনের বিভিন্ন ধারা আরোপ করা হয়েছে। আপাতত পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে তাদের।