জম্মু: ২২৩৪ জন পূণ্যার্থীকে নিয়ে বেস ক্যাম্প থেকে শুরু হল চলতি বছরে অমরনাথ যাত্রা। সোমবার দক্ষিণ কাশ্মীরে হিমালয়ের  ৩৮৮০ মিটার উঁচু অমরনাথ গুহার উদ্দেশ্যে তীর্থযাত্রীদের যাত্রা শুরু হয়। ২২৩৪ জন পূণ্যার্থীকে নিয়ে বেস ক্যাম্প থেকে রওনা দিল প্রথম দল।

৪৬ দিনের এই যাত্রায় এই বছর নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছেন প্রায় দেড়  লক্ষ পূণ্যার্থী। পহলগাম রুট দিয়ে ৩৬ কিলোমিটার ও বালতাল রুটে ১৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছাতে হয় অমরনাথ গুহায়। বেসক্যাম্প থেকে গোটা দলটি দুই ভাগে ভাগ হয়ে পহলগাম ও বালতাল রুট হয়ে যাত্রা শুরু করেছে। সব ঠিক থাকলে অগাস্টের ১৫ তারিখ, রাখি বন্ধনের দিন শেষ হবে এই যাত্রা।

গভর্নর কে কে শর্মা ভগবতী নগর বেস ক্যাম্প থেকে প্রথম দফার এই যাত্রা শুরু করেন। মোট ৯৩ টি যানবাহন ও সমস্ত প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে যাত্রা শুরু হয়। সিআরপিএফ-এর ইন্সপেকটর জেনারেল এ ভি চৌহান জানান, তীর্থযাত্রীদের প্রয়োজনীয় সবরকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ন্যাশানাল কনফারেন্স এর আঞ্চলিক সভাপতি দেবেন্দ্র সিং রাণা ও বিজেপির বিধান পরিষদীয় সদস্য বিক্রম রন্ধওয়াবা যাত্রা শুরুর এই অনুষ্ঠানে বেসক্যাম্পে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা জানান, পূণ্যার্থীদের সব রকম সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থাই পথে করা রয়েছে। আশা করা যায় তাঁদের যাত্রা সুগম হবে। তীর্থযাত্রীদের মধ্যেও এই যাত্রা ঘিরে প্রতিবারের মতোই চোখে পড়ার মতো উৎসাহ ছিল।

সিআরপিএফ-এর তরফে জানানো হয়, যাত্রার সময় মজুত থাকবে ছোট অ্যাম্বুলেন্স। প্রত্যেক গাড়ি চালকের সঙ্গে একজন থাকছেন যিনি আপৎকালীন ঘটনায় প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে যাবেন। থাকছে বিশেষভাবে বানানো মোটরবাইক।

নিরাপত্তাকে আরও সুরক্ষিত করার জন্য এই প্রথমবার ব্যবস্থা করা হয়েছে বারকোড দেওয়া পরিচয় পত্রের। নাম নথিভুক্ত করার সময় প্রত্যেক যাত্রীকে দেওয়া হয়েছে বারকোড ও ছবি লাগানো স্লিপ। যাত্রাপথে পরীক্ষা করা হবে এইসব স্লিপ। সুরক্ষার জন্য ইতিমধ্যেই মোতায়েন করা হয়েছে প্রচুর পুলিশ বাহিনী। এই প্রথমবার যে গাড়িগুলি সঙ্গে যাচ্ছে তাতে লাগানো রয়েছে ‘রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি চিপ’। পুলওয়ামার যে হাইওয়েতে জঙ্গি হামলা হয়েছিল সেই রাস্তাটিও এই যাত্রাপথের মধ্যেই পড়ে। জম্মু- শ্রীনগর ন্যাশানাল হাইওয়ের সেই অংশ দিয়ে পূণ্যার্থীদের যাতায়াতের সময় কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে পুলিশ।

১৪ই ফেব্রুয়ারী পুলওয়ামায় যে আত্মঘাতী জঙ্গি হামলা হয় তারপরেই নিরাপত্তা ব্যাবস্থা আঁটোসাঁটো করার চেষ্টা করছে সরকার। লোকসভা ভোটের পরেও কাশ্মীরে মোতায়েন রয়েছে ৩০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রয়োজনে পাঠানো হতে পারে আরও বাহিনী। ২০১৭ সালে তীর্থযাত্রীদের বাসের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছিল। হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ৮ তীর্থযাত্রী।