নয়াদিল্লি: বিহার, উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। বন্যা-কবলিত মোট রাজ্য থেকে প্রায় ২৬ হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্র।


বিহারে বিভিন্ন নদীতে জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে ভোজপুর, বক্সার, মুঙ্গের, ভাগলপুর এবং খাগাড়িয়া জেলা।

পাশাপাশি, পটনার নিচু এলাকাগুলি এবং সংলগ্ন বৈশালী এবং সরণ জেলার অধিকাংশ অংশই জলের তলায়।

রেললাইন জলমগ্ন হওয়ার ফলে ছাপড়া ও বালিয়ার মধ্যে ট্রেন চলাচল বন্ধ। জাহানাবাদ ও আরওয়াল জেলাও জলের তলায়।

উত্তরপ্রদেশের পূর্ব প্রান্তের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ। গঙ্গার জল বহু জায়গায় ফুঁসছে। বিহারের মতোই এখানেও গঙ্গা বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। ইলাহাবাদ ও বারাণসীতে নদীর জলস্তর বেড়েছে। বন্যা-পীড়িতদের অন্যত্র সরাতে সেনাবাহিনীকে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে।

গঙ্গা ও যমূনা—দুই নদীর জলই বেড়ে চলেছে। নদী সংলগ্ন প্রায় ১০০ গ্রাম ফাঁকা করে প্রায় ১০ হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বালাই ও বন্দা জেলায় উদ্ধারকার্যে পাঠানো হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে।

গঙ্গার জলস্তর বাড়ায় বারাণসী, বাল্লিয়া, মির্জাপুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে, যমূনার জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় বান্দা, মথুরা এবং ইলাহাবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেটওয়ার জল প্রতি ঘণ্টায় ২ থেকে ৩ সেন্টিমিটার হারে বাড়ছে।

অন্যদিকে, রাজস্থানে দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে অতিবৃষ্টির ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত। বিভিন্ন সেতু জলের তলায় চলে গিয়েছে। ফলে, যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রতাপগড়ে ২৬ সেমি বৃষ্টি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নিম্বহেড়, বাদি সাদরি এবং ভাদেসরে ২২ সেমি বৃষ্টি হয়েছে। চিত্তোরগড়, বরন, দুঙ্গারপুর, বাঁসওয়াড়া এবং ঝালাওয়ার জেলাতেও ভাল বৃষ্টি হয়েছে।

মধ্যপ্রদেশে, মৌসুমী বৃষ্টির ফলে একাধিক এলাকা প্রভাবিত হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে পশ্চিম প্রান্তের বু্ন্দেলখণ্ড এবং বিন্দ্যাঞ্চলে উদ্ধারকার্য শুরু হয়েছে। গুণা, রাজগড়, মন্দসুর, উজ্জয়িনীতে বৃষ্টির ফলে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে বন্যা-কবলিত রাজ্যগুলিকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্র। এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানান, দেশের বন্যা-পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।

মোদী জানান, তিনি উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ বিহার, উত্তরাখণ্ড এবং রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে বন্যা সম্পর্কিত হাল-হকিকৎ জেনেছেন। তাঁর আশা, এই পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে।

বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কবলিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন রাজনাথও। মন্ত্রক থেকে প্রকাশিত বিবৃতির মাধ্যমে রাজনাথ জানান, তিনি রাজ্যগুলিকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।

জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই বন্যা-কবলিত পাঁচ রাজ্য থেকে প্রায় ২৬ হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। শুধুমাত্র বিহার ও উত্তরপ্রদেশেই ৫৬টি টিম মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে ৯ হাজারের বেশি মানুষকে সুশ্রূষা করা হয়েছে।