শুধু এই নির্দেশই বহাল রাখেনি শীর্ষ আদালত, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দেরিতে আবেদন জানানোয় সিবিআইকেও সুপ্রিম কোর্টের ভর্ত্সণার মুখে পড়তে হয়েছে। বিচারক তাঁর রায়ে বলেন, সিবিআই প্রধানের এই গুরুত্বপূর্ণ মামলাটি আরও ভালভাবে নজরে রাখা উচিত্ ছিল। এই মামলার ওপর নজরদারির জন্যে একজন বিশেষ আধিকারিকও নিযুক্ত করা উচিত্ ছিল।
১৯৯৬ সালে বিহারে পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির ঘটনায় লোপাট হয়েছিল প্রায় ৯৫০ কোটি টাকা৷ গবাদি পশুর খাদ্য কেনার নামে ভুয়ো বিল দেখিয়ে চাইবাসা ট্রেজারি থেকে ৯৬ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে৷ দেওঘর কোষাগার থেকেও টাকা সরানো হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব-সহ একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়৷ পটনা হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্ত শুরু করে সিবিআই৷
২০০১ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাঁচির বিশেষ সিবিআই আদালতে ওই মামলা স্থানান্তরিত করা হয়৷ ২০১৩ সালের অক্টোবরে এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় লালুকে পাঁচ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে রাঁচির বিশেষ সিবিআই আদালত। নীতীশ কুমারের জোট সরকারের অন্যতম সদস্য হওয়ায় লালুর ওপর কোনও রকম সরকারি পদ ধরে রাখার ওপর জারি হয় নিষেধাজ্ঞা। আপাতত জামিনে মুক্ত রয়েছেন লালু।
এরপরই ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট দেওঘর কোষাগার থেকে টাকা লোপাটের অভিযোগে লালুপ্রসাদ আগেই সাজাপ্রাপ্ত এই যুক্তি দেখিয়ে তাঁকে চাইবাসা মামলা থেকে রেহাই দেয়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় সিবিআই।
প্রসঙ্গত, এই সমস্ত মামলাগুলিই লালুর মুখ্যমন্ত্রীত্ব কালে পশুখাদ্যকে ঘিরে যে হাজার কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছিল সেটাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়। ২০১৪ সালে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট লালুর ওপর থেকে ভারতীয় দণ্ডবিধির দুর্নীতি দমন আইনে ১২০, ১২০ বি, ৪০৯, ৪২০, ৪৭১, ৪৭৭, ৪৭৭এ, ১৩(২) ধারা তুলে নেয়। কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিউর অ্যাক্টের সেকশন ৩০০ এবং ভারতীয় সংবিধানের আর্টিকেল ২২ অনুযায়ী, একব্যক্তি যদি কোনও অভিযোগে আগেই দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তাঁকে সেই একই অভিযোগে অন্য মামলায় ফের দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না।