নয়াদিল্লি: যে সব এলাকায় সেনাবাহিনীর বিশেষ অধিকার আইন বা আফস্পা রয়েছে, সেখানে সেনাকে অনাক্রম্যতা দিতেই হবে। জোরালোভাবে সুপ্রিম কোর্টে এই সওয়াল করল কেন্দ্র। কোনওভাবেই সে সব এলাকায় সেনার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না বলে দাবি করেছে তারা।


সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল, উপদ্রুত এলাকা, যেখানে আফস্পা চালু রয়েছে, সেখানেও যদি জঙ্গি বিরোধী অপারেশনের সময় কারও এনকাউন্টারে মৃত্যু হয়, তাহলেও এফআইআর আবশ্যিক। গত বছর ৮ জুলাইয়ের এই রায়ে আফস্পা এলাকায় সেনাবাহিনীর বিচারবিভাগীয় আওতার বাইরে থাকার যে রক্ষাকবচ রয়েছে, তা বাতিল করে দেয় তারা।

তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে নজিরবিহীনভাবে সরব হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। অ্যাটর্নি জেনারেল মুকুল রোহতগি বলেছেন, যদি এই রায় বলবৎ থাকে, তবে একটা সময় এমন আসতে পারে, যথন শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা যাবে না। নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে সেনাকে এমন কিছু দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়, যা নিয়ে পরে সাধারণ খুনের ঘটনার মত কাটাছেঁড়া চলে না। সেনা অপারেশন অন্যান্য ঘটনার মত বিচারবিভাগীয় আওতায় আসতে পারে না। অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত জঙ্গিদের মুখোমুখি হতে হলে সেনাকে সর্বশক্তি প্রয়োগ করতেই হবে, তা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ নেই। কিন্তু যদি সেনা কর্মীর মনে চিন্তা থাকে, তাঁর হাতে কোনও জঙ্গির মৃত্যু হলে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর হতে পারে, তাহলে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হতে চাওয়া জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই জেতাটা কঠিন হয়ে যাবে আমাদের।

এজি স্পষ্ট জানিয়েছেন, শুধু যে জঙ্গি বিরোধী অপারেশনে নামা সেই সেনাকর্মীদের জন্য এই আবেদন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তা নয়, যাঁদের প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর আশঙ্কা আছে, এই আবেদন ততটাই গুরুত্বপূর্ণ দেশের নিরাপত্তা ও অখণ্ডতার পক্ষেও।

কাশ্মীরে যেভাবে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা পাথর ছুঁড়ে সেনার জঙ্গি বিরোধী অপারেশনে বাধা সৃষ্টি করেছে ও সেনাপ্রধান হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, জঙ্গি বিরোধী কার্যকলাপের সময় যারা পাথর ছোঁড়ে তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী বলেই গণ্য করা হবে, সেই প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের এই অবস্থান আলাদা গুরুত্ব বহন করছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, কেন্দ্রও যে উপত্যকায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হিংসাকে কড়া হাতে দমন করার পক্ষে এই বক্তব্যে তা পরিষ্কার। যদিও এর ফলে সুপ্রিম কোর্ট তার আগের রায় থেকে সরে আসবে এমন আশা কোনও পক্ষই করছে না।