আগ্রা: তাজমহল চত্বর ঢুকে গেরুয়া পতাকা উড়িয়ে শ্রীঘরে স্থান হল চারজনের। হেরিটেজ স্থানের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ আধিকারিকরা তাদের পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। জানা গিয়েছে, হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু জাগরন মঞ্চে সঙ্গে যুক্ত গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা।


তাজমহল চত্বরের স্থানীয় তাজগঞ্জ পুলিশ স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনস্পেক্টর উমেশ চন্দ্র ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, দক্ষিণপন্থী নেতা গৌরব ঠাকুর ও তাঁর তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আইপিসি ১৫৩এ (ভিন্ন গ্রুপ বা ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানো) ও সেকশন ৭-র অপরাধীবিরোধী আইন সংশোধনের আওতায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এক সূত্রের দাবি, তাজ চত্বরে ঢুকে শিব চালিশা আওড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে গেরুয়া পতাকা ওড়াতে শুরু করেন ওই চারজন।

হিন্দু জাগরন মঞ্চের নেতা গৌরব ঠাকুরের নেতৃত্বে এরকম ঘটনা এই প্রথম নয়। গত অক্টোবর মাসেও তাজমহল চত্বরে ঢুকে গেরুয়া পতাকা উড়িয়ে শিব পুজো করার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে।

একটি ভিডিও পোস্ট করেন তারা। ভাইরাল হয়ে ওঠা যে ভিডিওতে দেখা যায় একটি বেদির উপর বসে রয়েছেন অভিযুক্ত গৌরব ঠাকুর। চোখ বন্ধ করে তিনি কিছু মন্ত্র আওড়াচ্ছেন। আর তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে বাকি তিনজন উড়িয়ে চলেছেন গেরুয়া পতাকা।

গৌরব ঠাকুরের দাবি, তাজমহলে তিনি ছিটিয়ে এসেছেন গঙ্গাজল। কারণ আসলে তাজমহলের জায়গায় আসলে ছিল ‘তেজো মহালয়’, যা নাকি শিব ঠাকুরের মন্দির।

বিশ্বের অন্যতম পরিচিত হেরিটেজ স্থান তাজমহল। দেশ বিদেশ থেকে এই ‘আশ্চর্য’ দেখতে আসেন পর্যটকরা। মাঝে লকডাউনের পর থেকে ধীরে ধীরে যেখানে উঠে যায় দর্শনার্থীদের প্রবেশে চাপানো নিষেধাজ্ঞাও। নতুন বছরের শুরু থেকেই তাই তাজমহল চত্বরে দেখা যায় বিপুল ভিড়। তার মাঝেই এই ঘটনা।

হিন্দু জাগরন মঞ্চের নেতারা দাবি করলেও সংসদে অবশ্য আগেই সরকারের পক্ষ থেকেই জানানো হয়েছিল, তাজমহলের জায়গায় হিন্দু মন্দির কখনও ছিল, এমন কোনও তথ্য নেই। ২০১৫ সালে কেন্দ্রের মন্ত্রী মহেশ শর্মা সংসদে যেমনটা জানিয়েছিলেন।

আর্কিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়াও আগেই খারিজ করে দিয়েছিল মোঘল সাম্রাজ্যের সময় তৈরি স্থাপত্য তাজমহলের স্থানে আগে কোনও শিব মন্দির থাকার দাবি। যদিও তাতেও কিছু সংগঠনের তেজো মহালয়-র দাবি বন্ধ হয়নি।