পটনা: টানা ৬ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিল ৯ বছরের মেয়েটা। চিকিৎসার জন্য ১৪০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে তাকে পটনার এইএমসে নিয়ে যান বাবা-মা। কিন্তু সেখানে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করার বদলে আউটপেশেন্ট ডিপার্টমেন্টে রেজিস্ট্রেশনের জন্য দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়াতে হয় মেয়েটির বাবাকে। কেউ তাঁর আর্জিতে সাড়া দেয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, চিকিৎসা শুরু করতে গেলে আগে রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিতে হবে। সেটা আর নেওয়ার দরকার হয়নি। চিকিৎসা শুরু হওয়ার আগেই ছোট্ট মেয়েটির মৃত্যু হয়।

মেয়েটির বাবা-মার যন্ত্রণা এখানেই শেষ হয়নি। সময়মতো চিকিৎসা না করে মেয়েটিকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার পরেও এইএমএস কর্তৃপক্ষের বিবেকের দংশন হয়নি। মেয়েটির মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স চেয়েও পাওয়া যায়নি। ফলে তার বাবাকে মেয়ের মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে অটোরিকশা স্ট্যান্ড পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার হেঁটে যেতে হয়।

এইএমএস-এ সাফাইয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি বেসরকারি সংস্থার এক কর্মী স্বীকার করেছেন, রামবালক ওপি়ডি-তে রেজিস্ট্রেশনের কাজ সম্পূর্ণ করার আগেই তাঁর মেয়ের মৃত্যু হয়। এইএমএস-এর ডিরেক্টর প্রভাত কুমার সিংহের অবশ্য দাবি, বিনা চিকিৎসায় কারও মৃত্যুর খবর তাঁর জানা নেই। গুরুতর অসুস্থ রোগীদের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশনের আগেই চিকিৎসা শুরু করে দেওয়া হয়। এর অন্যথা হয়ে থাকলে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হবে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নীতীশ কুমার সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছেন আরজেডি প্রধান লালুপ্রসাদ যাদব। তাঁর দাবি, রাজ্য সরকার গরিবদের প্রতি উদাসীন। বিহারে আইন-শৃঙ্খলা, স্বাস্থ্য, শিক্ষা সহ সবক্ষেত্রেই বেহাল দশা। মেয়েটির মৃত্যুর ঘটনা দেখিয়ে দিল, পটনা এইএমএস-এ গরিবদের জন্য চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা নেই। বিহারের লোকজন সামান্য কারণে নয়াদিল্লির এইএমএস-এ ভীড় করছেন বলে মন্তব্য করায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী অশ্বিনীকুমার চৌবেরও সমালোচনা করেছেন লালু।