পানাজি: দিল্লির প্রতিরক্ষামন্ত্রক থেকে ফের গোয়াতেই ফিরে এলেন মনোহর পর্রীকর।


রবিবার গোয়ার রাজ্যপাল মৃদুলা সিংহ তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী পদে নিযুক্ত করেছেন। তবে সরকার গঠনের ১৫দিনের মধ্যে বিধানসভায় তাঁকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে।

রাজ্যপালের অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পর্রীকর রাজ্যপালকে প্রমাণ দিয়েছেন, তাঁর কাছে বিজেপির ১৩, এমজিপির ৩, গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির ৩ ও ২জন নির্দল বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। সব মিলিয়ে ৪০ সদস্যের বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ ২১জনের সমর্থন রয়েছে তাঁর সঙ্গে।

তবে যেভাবে একক বৃহত্তম দল না হওয়া সত্ত্বেও বিজেপি ক্ষমতা দখল করল, তার সমালোচনা করেছে কংগ্রেস। দিগ্বিজয় সিংহ অভিযোগ করেন, গোয়ায় সরকার গড়ার জায়গায় আছে কংগ্রেস অথচ বিজেপি ঘোড়া কেনাবেচা করে ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইছে। অবিজেপি বিধায়কদের অর্থ ও মন্ত্রীপদ পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখানো তো চলছেই, পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে এসইউভি গাড়িও। যে দলের মুখ্যমন্ত্রী সহ ৭ মন্ত্রী ভোটে হেরেছেন, তারা কীভাবে সরকার গড়ার দাবি করে, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।

কিন্তু ঘটনা হল, ৪০ বিধায়সভা কেন্দ্রর ১৭টি জিতে একক বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে আসা সত্ত্বেও গোয়ার আঞ্চলিক রাজনীতিতেই মার খেল কংগ্রেস। রবিবার সকালেই বিজেপি প্রথমে ২ নির্দল বিধায়কের সমর্থন জিতে নেয়। তারপর তারা টার্গেট করে গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টি ও মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টির ৩জন করে বিধায়ককে। গোয়ার একমাত্র এনসিপি বিধায়কেরও সমর্থন পায় তারা। প্রয়োজনীয় সমর্থন জুটিয়ে সন্ধের মধ্যে পর্রীকর গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে সরকার গড়ার দাবি করেন। ২২জন বিধায়কের সমর্থন তাঁর কাছে থাকায় স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যপালের সবুজ সংকেত পেতে অসুবিধে হয়নি।

পরে রাজ্য বিজেপির নির্বাচনী ইনচার্জ নীতীন গড়করির সঙ্গে এক সাংবাদিক বৈঠকে পর্রীকর জানান, বিজেপির নিজের কাছে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিধায়ক না থাকলেও জোট সঙ্গীদের নিয়ে ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছতে পেরেছেন তাঁরা। গোয়াবাসীদের তাঁর প্রতিশ্রুতি, রাজ্যে স্থিতিশীল সরকার আসবে, যারা উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে গোয়াকে।

অথচ কংগ্রেস ভেবেছিল, গোয়া ফরওয়ার্ড পার্টির ৩ বিধায়কের সমর্থন তাদের দিকে থাকবে। কংগ্রেসের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে জিএফপির বোঝাপড়াও ছিল। কিন্তু ভোটে তারা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিতে জোট ভেঙে যায়। এমজিপি, জিএফপি- দুই দলই জানিয়ে দেয়, একমাত্র পর্রীকরকে যদি গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী পদে ফিরিয়ে আনা হয়, তবে তারা বিজেপিকে সমর্থন করবে।

এরপর গড়কড়ি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের কাছে গোটা পরিস্থিতির ব্যাখ্যা করেন। বিজেপি সংসদীয় দলও বলে পর্রীকরকে গোয়ায় ফিরিয়ে দিতে। এরপরেই ঠিক হয়, রাজ্যে স্থায়ী সরকার গঠনের স্বার্থে পর্রীকর প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ছেড়ে গোয়ায় ফিরে যাবেন।