নয়াদিল্লি: দোরগোড়ায় শীত। তার সঙ্গেই দরজায় কড়া নাড়ছে একাধিক সংক্রমণ—ইনফ্লুয়েঞ্জা, সাধারণ কাশি, নিউমোনিয়া এবং শ্বাসজনিত সমস্যা।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই সংক্রমণগুলি সাধারণত হাওয়ায় ভাসমান ধূলিকণা বা ‘ফোমাইট’ (জামাকাপড়, বাসন ও আসবাব-এর মতো এমন কোনও কঠিন বস্তু, যার ওপর জীবাণু ও রোগ থাকতে পারে)-এর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
কোনও সংক্রমিত বা অসুস্থ ব্যক্তির থেকে জীবাণু ফোমাইটে স্থানান্তর হয়। জীবাণুগুলি সেখানে দীর্ঘক্ষণ থাকতে পারে। পরে, সেখান থেকে আবার কোনও সুস্থ ব্যক্তির দেহে চলে যায় জীবাণু। ফলে, তিনিও সংক্রমিত হয়ে পড়েন।
এটা প্রমাণিত যে, গণ-পরিবহণ যেমন বাসের আসন ও হ্যান্ডল, দরজার কড়া-হাতল, লক, শৌচাগারের আসন বা কল—এসব থেকে রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু, একটা ‘ফোমাইট’ যা অবহেলিত হয়, তা হল এটিএম মেশিন।
সমীক্ষায় উঠে এসেছে, এটিএম মেশিনে রয়েছে নম্বর প্যাড বা টাচ-স্ক্রিন। সব মানুষই তা ব্যবহার করেন। গবেষকরা বলছেন, ফলে এটিএম সম্ভাব্য ‘ফোমাইট’ হিসেবে কাজ করতেই পারে। এটিএম-এর মাধ্যমে অতি সহজেই এক ব্যক্তি থেকে আরেক ব্যক্তির দেহে জীবাণু চলে যেতে পারে।
গবেষকদের দাবি, এটিএম-এর মধ্যকার তাপমাত্রা ও আদ্রতা, মেশিনের উষ্ণতা—সবকিছুর ফলে জীবাণু দীর্ঘক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে। কোনও ব্যক্তি এটিএম-এর নম্বর প্যাড বা স্ক্রিন ছুঁয়ে নিজের নাক-চোখ-মুখে হাত দেন, তাহলে জীবাণু তার শরীরে চলে যেতে পারে।
গবেষণায় উঠে এসেছে, মূলত এই জায়গায় যে জীবাণুগুলির দেখা মেলে, সেগুলি শ্বাসজনিত ও ডায়রিয়া সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়া ও ভাইরাস হয়। পরীক্ষা চালিয়ে এটিএম থেকে প্রায় ১৫০টি ব্যাক্টেরিয়ার সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি করে দেখা মেলে ক্লেবসিয়েলা ব্যাক্টেরিয়ার। এই ব্যাক্টেরিয়া মানবদেহের বৃহদন্ত্রে পাওয়া যায়। সাধারণত, কোনও ক্ষতি করে না। কিন্তু, ফুসফুসে গেলে তা মারাত্মক আকার নিতে পারে।
সমীক্ষায় উঠে এসেছে, মানুষ এমনিতে এটিএম ব্যবহারের সময় কোনওপ্রকার স্বাস্থ্যবিধি মানেন না। ফলে অচিরেই বিপদ ডেকে আনতে পারেন তাঁরা। বিজ্ঞানীদের মতে, এই বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা উচিত। তবেই রোগ-জীবাণুর প্রসার রোখা সম্ভব হবে।