নয়াদিল্লি: তাৎক্ষনিক তিন তালাক বিরোধী খসড়া আইন অনুমোদন করল কেন্দ্র। খসড়ায় একতরফা তিন তালাক দিলে মুসলিম স্বামীর তিন বছর কারাদণ্ড, জরিমানার সুপারিশ করা হয়েছে। তিন তালাক প্রথাকে বেআইনি, অচল বলা হয়েছে খসড়ায়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের নেতৃত্বাধীন আন্তঃমন্ত্রী গোষ্ঠী ওই খসড়া তৈরি করেছে। গোষ্ঠীতে রয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ ও তাঁর মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী পি পি চৌধুরি।
'মুসলিম উইমেন প্রটেকশন অব রাইটস অন ম্যারেজ' শীর্ষক খসড়াটি নিয়ে আলোচনা করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে বলে জানান সরকারি অফিসার। প্রস্তাবিত আইনটি শুধুমাত্র তাৎক্ষনিক তিন তালাক বা তালাক-ই-বিদ্দত-এর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। এই আইনের জোরে তিন তালাক পাওয়া মহিলা নিজের ও নাবালক সন্তানদের জন্য পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ চেয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের দ্বারস্থ হতে পারবেন, শিশুসন্তানদের নিজের হেফাজতে রাখার দাবিও পেশ করতে পারবেন।
গত মাসেই কেন্দ্র দেশের সব রাজ্যের কাছে এ ব্যাপারে মতামত চায়। শুক্রবার সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরুর দিনেই খসড়াটি অনুমোদন করল কেন্দ্র। জম্মু ও কাশ্মীর বাদে দেশের সর্বত্র তিন তালাক সংক্রান্ত যাবতীয় বিবাদের মীমাংসা হবে প্রস্তাবিত আইনে।
প্রসঙ্গত, মৌখিক, লিখিত বা ইলেকট্রনিক, যে কোনও ভাবে ঘোষিত তাৎক্ষনিক তিন তালাক নিষিদ্ধ ও ধর্তব্যযোগ্য অপরাধ বলে ঘোষিত হয়েছে। গত আগস্টে সুপ্রিম কোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে তাৎক্ষনিক তিন তালাক বেআইনি, সংবিধান বিরোধী বলে জানিয়ে দেওয়ার পরও এই অভিশপ্ত কুপ্রথা বন্ধ হয়নি। ৬৭টি তাৎক্ষনিক তিন তালাক দেওয়ার ঘটনার কথা জানা গিয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের ওই রায় ঘোষণার আগে তাৎক্ষনিক তিন তালাকের ঘটনার সংখ্যা ছিল ১৭৭টি। তাৎক্ষনিক তিন তালাক দেওয়ার ঘটনা সবচেয়ে বেশি উত্তরপ্রদেশ, বিহারে। এই প্রেক্ষাপটেই মন্ত্রিগোষ্ঠী তৈরি করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
প্রসঙ্গত, তাৎক্ষনিক তিন তালাকের অবসান ঘটানোর বিষয়টি উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রচারের বড় ইস্যু হয়ে উঠেছিল। এভাবে মুসলিম মহিলাদের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করে তারা।