নয়াদিল্লি: দেশের নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত না করে সংবিধান মেনে জম্মু ও কাশ্মীরের সব স্তরের মানুষের ‘ক্ষোভ’ নিরাময়ে প্রস্তুত কেন্দ্র। এমনটাই জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একইসঙ্গে, পাকিস্তানকেও একহাত নিলেন। বললেন, কাশ্মীরকে আন্তর্জাতিক মহলে তোলার আগে অধিকৃত কাশ্মীর এবং বালোচিস্তানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহি করুক ইসলামাবাদ।

এদিন রাজধানীতে কাশ্মীর ইস্যুতে সর্বদলীয় বৈঠকের পৌরহিত্য করেন মোদী। বৈঠকে উপস্থিত ছিল রাজ্যের শাসক তথা এনডিএ শরিক পিডিপি এবং বিরোধীরা। উপত্যকায় অশান্তির মূল কারণ হিসেবে সীমান্ত পার থেকে পাকিস্তানের সন্ত্রাস পাচারকে দায়ী করেন মোদী।

এদিন প্রায় চার-ঘ্ণ্টা ধরে ম্যারাথন বৈঠক হয়। সেখানে কাশ্মীরিদের আস্থা অর্জনে কেন্দ্রকে অবিলম্বে কিছু আপাত দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব দেয় বিরোধী দলগুলি। এরমধ্যে পেলেট-গান ব্যবহার রোধ থেকে শুরু করে উপত্যকার কিছু এলাকায় সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইনকে (আফস্পা) শিথিল করার পরামর্শও দেওয়া হয় বিরোধীদের তরফে।

পাশাপাশি, এ-ও প্রস্তাব দেওয়া হয়, কাশ্মীরের সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সেখানে সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল পাঠানো হোক। তবে, কেন্দ্র এদিন কোনও প্রতিশ্রুতি দেয়নি। উল্টে মোদী বলেন, আমরা একটা জাতীয় অনুভূতির বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ যে, দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রশ্নে কোনও আপস সম্ভব নয়। তবে, একইসঙ্গে মোদী জানিয়ে দেন, সংবিধান মেনে জম্মু ও কাশ্মীরের সকল স্তরের মানুষের ‘ক্ষোভ’ নিরাময়ে প্রস্তুত সরকার।

বস্তুত, এই নিয়ে এক সপ্তাহে দুবার তিনি কাশ্মীরের মানুষের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করলেন এবং আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করলেন। এর জন্য তিনি সব পক্ষকেই স্বাগত জানিয়েছেন। একইসঙ্গে, এই মঞ্চকে ব্যবহার করে পাকিস্তানকেও একহাত নেন মোদী।

প্রধানমন্ত্রীর মতে, যেখানে পাক-অধিকৃত কাশ্মীর এবং বালোচিস্তানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়ে চলেছে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের জবাবদিহি করা উচিত। তাঁর অভিযোগ, তা না করে জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই ব্যস্ত ইসলামাবাদ।

একদিকে, যেখানে কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছেন মোদী, সেখানেই এদিন কাশ্মীরে শান্তি ফেরানোর জন্য প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে পাশ হল লোকসভায়। প্রস্তাব পাশ হওয়ার পর তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে দুবার এমন ঘটনা ঘটল, যেখানে লোকসভা ঐকমত্য দেখিয়েছে। প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহেই জিএসটি বিল নিয়ে একইরকম ঐকমত্যের সাক্ষী থেকেছে লোকসভা।