নয়াদিল্লি: কেন্দ্রের প্রস্তাবিত চার-স্তরীয় পণ্য পরিষেবা কর (জিএসটি) কার্যকর হলে মধ্যবিত্তের হেঁসেলে আগুন লাগবে। কারণ, এই করের ফলে ভোজ্য তেল, মশলা ও মুরগির মাংসের দাম বৃদ্ধি পাবে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। অন্যদিকে কমতে পারে টিভি, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন এবং এসি-র দাম। আগামী অর্থবর্ষ থেকেই দেশজুড়ে এক দেশ-এক করবা জিএসটি চালু করার কথা ভাবছে কেন্দ্র। তার আগে চলতি সপ্তাহে রাজ্যগুলির সঙ্গে এই প্রসঙ্গে বৈঠক করে কেন্দ্র। সেখানে, চার-স্তরীয় কর ব্যবস্থার প্রস্তাব দেওয়া হয় কেন্দ্রের তরফে। জানা গিয়েছে, প্রস্তাব অনুযায়ী, সর্বনিম্ন করের হার ৬ শতাংশ। অন্যদিকে, সর্বোচ্চ হার ২৬ শতাংশ। এর মাঝে দুটি স্বাভাবিক হারের স্তর রাখা হয়েছে১২ ও ১৮ শতাংশ। সূত্রের খবর, ২৬ শতাংশ হার মূলত এফএমসিজি এবং খাদ্যপণ্যের ওপর বলবৎ হবে। পাশাপাশি, যেসব পণ্য দূষণ ছড়ায়, সেগুলির ওপর অতিরিক্ত সেস বসবে। কেন্দ্রের প্রস্তাব কার্যকর হলে, মুরগির মাংস ও নারকোল তেলের দাম বাড়বে। কারণ, বর্তমানে এই দুই পণ্যের ওপর ৪ শতাংশ কর প্রযোজ্য হয়। জিএসটি-র ফলে তা বেড়ে ৬ শতাংশ হবে। একইভাবে, অন্যান্য ভোজ্য তেল, সরষের তেল এবং বাদাম তেলের করের হার ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬ শতাংশ হবে। এখানেই শেষ নয়। মধ্যবিত্তের জন্য আরও চিন্তার কারণ রয়েছে। হেঁসেলের দুই গুরুত্বপূর্ণ পণ্য – হলুদ ও জিরে। এই দুই পণ্যের হার ৩ শতাংশ থেকে বেড়ে দ্বিগুণ হবে। ৫ শতাংশ থেকে আরও এক শতাংশ কর বৃদ্ধি হয়ে আরও চড়া হতে পারে ধনে, গোল মরিচ এবং তৈলবীজ। এছাড়া, গ্যাস স্টোভ, গ্যাস বার্নার, মশা তাড়ানোর যন্ত্র বা কয়েলের দামও বাড়বে। ফলে, সব মিলিয়ে কেন্দ্রের বহু প্রতিক্ষিত পণ্য পরিষেবা কর চালু হলে মধ্যবিত্তের কপালের চিন্তার ভাঁজ বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়। দাম বাড়তে পারে কীটনাশকের। জিএসটি চিন্তার কারণ হতে পারে কৃষকদের কাছেও!
তবে কয়েকটি ক্ষেত্রে সুখবরও বয়ে আনতে পারে জিএসটি। পণ্য পরিষেবা করের ফলে দাম কমতে পারে, টেলিভিশন, বাতানুকূল যন্ত্র, ওয়াশিং মেশিন, ইনভার্টার, রেফ্রিজারেটর, বৈদ্যুতিন পাখা, বৈদ্যুতিন রান্নার সরঞ্জাম সহ বেশ কিছু পণ্যের। বর্তমানে এই জিনিসগুলিক ওপর ২৯ শতাংশ কর চাপানো হয়। জিএসটি হলে সেই হার কমে হবে ২৬ শতাংশ। একইভাবে, সস্তা হতে পারে বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস। যেমন সুগন্ধি, শেভিং ক্রিম, বডি পাওডার, মাথায় মাখার তেল, শ্যাম্পু, সাবান সহ বিভিন্ন টয়লেটরিজের দামও ৩ শতাংশ কমবে।