মোদীর বিশ্বাসযোগ্যতা ধাক্কা খেয়েছে, দাবি রাহুলের, ফের যাচ্ছেন গুজরাতে
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ | 19 Dec 2017 01:30 PM (IST)
নয়াদিল্লি:গুজরাতের ফল বিজেপিকে ধাক্কা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিশ্বাসযোগ্যতায় ধাক্কা লেগেছে। গুজরাত ভোটের ফল বেরোনোর পর প্রথমবার মুখ খুলে দাবি কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর। বললেন, কংগ্রেসের নৈতিক জয় হয়েছে। পাল্টা বিজেপির প্রশ্ন, দুই রাজ্যে হারল কংগ্রেস, আর ধাক্কা খেল বিজেপি?? !!! এ কেমন কথা!!! বিজেপি দাবি করছে, ষষ্ঠবার গুজরাতে জয়ের আসল কৃতিত্ব মোদীর নেতৃত্বে উন্নয়নের। কংগ্রেস পাল্টা মনে করিয়ে দিয়ে বলছে,নরেন্দ্র মোদীর জন্মভিটে ভডনগর যে বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সেই উঞ্ঝা বিধানসভা কেন্দ্রে এবার পরাজিত হয়েছে বিজেপি। মোদীর ঘরেই কংগ্রেস প্রার্থী ১৯ হাজার ৫২৯ ভোটে জিতেছেন। রাহুল দাবি করছেন, গুজরাতের ফল বিজেপিকে জোর ধাক্কা দিয়েছে। মোদীর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। রাহুলের দাবি, দেশ মোদীর কথা আর কানে তুলছে না। গুজরাতে ভোটের ফলই তা দেখিয়ে দিয়েছে। আগামী দিনে তা আরও স্পষ্টভাবে দেখা যাবে। মোদীর উন্নয়নের গুজরাত মডেলকেও তোপ দেগেছেন কংগ্রেসের নতুন সভাপতি। ওই মডেলকে সংগঠিত প্রচার ও বিপনন বলে মন্তব্য করে রাহুল বলেছেন, এটা আসলে ভেতরেই ফাঁপা। রাহুল বলেছেন, গুজরাতে গিয়ে জানতে পেরেছি, মানুষ আসলে মোদীর ওই মডেল গ্রহণ করছেন না। ৩-৪ মাস আগে যখন তিনি গুজরাত যান, তখন সকলে বলেছিল, কংগ্রেস বিজেপির মুখোমুখি দাঁড়াতেই পারবে না। কিন্তু দলীয় কার্যকর্তারা এমন জানপ্রাণ দিয়ে কাজ করেছেন, যে বিজেপিকে সমানে সমানে টক্কর দেওয়ার জায়গায় পৌঁছেছেন তাঁরা। ভোটের ফলাফল বিজেপির কাছে একটা বড়সড় ধাক্কা বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। গুজরাতের ফলাফলকে কংগ্রেসের পক্ষে নৈতিক জয় বলেও মন্তব্য করেছেন রাহুল। তিনি বলেছেন, তাঁরা হেরে গিয়েছেন ঠিকই কিন্তু জিততেও পারতেন। কিন্তু হেরেছেন নামমাত্র ব্যবধানে। রাহুলকে পাল্টা কটাক্ষ করেছে বিজেপি।কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেছেন, রাহুল বলছেন যে মোদীর বিশ্বাসযোগ্যতা কমছে। উল্টে গোটা দেশ আরও বেশি করে ভরসা করছে বিজেপির উপর। বরং কংগ্রেসকেই প্রত্যাখ্যান করছে। ১৯৯৫ সালে বিজেপি গুজরাতে পায় ১২১টি আসন।তিন বছর পর ১৯৯৮ সালে পায় ১১৭টি আসন।২০০২ সালে গুজরাত বিধানসভা ভোটে বিজেপি পেয়েছিল ১২৭টি আসন। ২০০৭ সালে ১১৭টি। ২০১২ সালে ১১৫টি। কিন্তু, এবার সেখানে তারা তিন অঙ্কে পৌঁছতে পারেনি। বিজেপির জয়রথ থেমেছে ম্যাজিক ফিগারের থেকে মাত্র ৭টি আসন বেশি অর্থাৎ ৯৯-তে। উল্টোদিকে কংগ্রেস গত ২২ বছরে এবারই গুজরাতে সবচেয়ে বেশি আসনে জিতল।১৯৯৫ সালে গুজরাতে কংগ্রেস পেয়েছিল মাত্র ৪৫টি আসন। ১৯৯৮ সালে ৫৩টি। ২০০২-এ ৫১টি। ২০০৭-এ ৫৯টি। ২০১২ সালে ৬১টি। এবার কংগ্রেস পঞ্চাশ-ষাটের কোটা থেকে একলাফে পৌঁছে গেছে একেবারে আশিতে। এই ফলের উপর ভিত্তি করে রাহুল দাবি করছেন, গুজরাত বিজেপিকে ধাক্কা দিয়েছে। এর পাল্টা জবাবে জাভড়েকর বলেছেন, কংগ্রেস গুজরাত, হিমাচলে হারল, আর ধাক্কা আমরা খেলাম? কংগ্রেস একের পর এক ভোটে হারছে, ধাক্কা ওদের। রাহুল বলেছেন, মোদী দুর্নীতি নিয়ে অনর্গল কথা বলেন। কিন্তু এবার অমিত শাহের ছেলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ও রাফালে চুক্তিতে বেনিয়মের অভিযোগের প্রসঙ্গে চুপ রয়েছেন? পাল্টা অর্থনীতি সম্পর্কে রাহুলের জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিজেপি। গুজরাতের ভোটের ফল নিয়ে এই রাজনৈতিক চাপানউতোরের মধ্যেই সূত্রের খবর,ভোটের ফল বেরোতেই ফের গুজরাত যাচ্ছেন রাহুল গাঁধী। আমদাবাদে তিনদিন থাকবেন তিনি।তিনি যে ভোটপাখি নন, মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকতে চান, সেটা বোঝাতেই সম্ভবত ফের একবার মোদীর রাজ্যে যাচ্ছেন রাহুল গাঁধী। এদিকে, ২৫ ডিসেম্বর গুজরাতের নতুন মুখ্যমন্ত্রী শপথ নিতে পারেন বলে সূত্রের খবর।