চণ্ডীগড়: ধর্ষণকাণ্ডে অপরাধী সাব্যস্ত গুরমিত রাম রহিম সিংহকে যখন পাঁচকুলার আদালত থেকে জেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন তাঁর ছায়াসঙ্গিনী হানিপ্রীতের হাতে ছিল একটি লাল রঙের ব্যাগ। পুলিশ বলছে, ওই ব্যাগ ছিল অনুগামীদের প্রতি রাম রহিমের সিগন্যাল। অশান্তি শুরু করার।

রাম রহিমের পরিকল্পনা ছিল, আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলেই তাঁর নিজস্ব কম্যান্ডো বাহিনী পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে তাঁকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাবে। শুক্রবার আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরেই তিনি সিরসা থেকে নিয়ে আসা লাল রঙের একটি ব্যাগ চান, বলেন, ওতে তাঁর জামাকাপড় আছে। এই সিরসাতেই ডেরা সাচা সৌদার সদর দফতর, ওখানে আগুনের মত ছড়িয়ে পড়ে অশান্তি।

পুলিশ জানাচ্ছে, জামাকাপড় থাকার ছুতোয় রাম রহিমের চাওয়া ওই ব্যাগটি ছিল তাঁর সমর্থকদের প্রতি সঙ্কেত। তাঁর লোকেরা সঙ্গে সঙ্গে খবর ছড়িয়ে দেয়, ‘বাবাজি’ দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় মারামারি, আগুন ধরানো। ব্যাগটি নিয়ে যখন রাম রহিমের এসইউভিতে ওঠা হচ্ছিল, তখনই আদালত থেকে অন্তত ২-৩ কিলোমিটার দূরে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটার শব্দ আসে।

পুলিশ বুঝে যায়, ওই ব্যাগ আসলে সঙ্কেত।

পাঁচকুলা থেকে রোহতকের জেল পর্যন্ত রাম রহিমের সঙ্গে ছিলেন তাঁর ছায়াসঙ্গিনী হানিপ্রীত। রাম রহিম দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পরেও হানিপ্রীত আদালত চত্বরে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন, মনে হচ্ছিল, ইচ্ছে করে সময় নষ্ট করছেন। পুলিশ বলেছে, হানিপ্রীতদের পরিকল্পনা ছিল সময় নষ্ট করার, যাতে রাম রহিমের আদালত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার খবর তাঁর সমর্থকদের মধ্যে ছড়িয়ে যায়। বিপদ বউজতে পেরে পুলিশ তাঁকে নিজের এসইউভি থেকে বার করে পুলিশের গাড়িতে তোলে। যখন তারা তাঁকে গাডি়তে তুলছিল, তখনও রাম রহিমের নিরাপত্তা রক্ষীরা ঘিরে দাঁড়ায় তাঁকে। পুলিশের ওপর হামলাও চালায় তারা।

যেভাবে অন্তত ৮০টা গাড়ি আর এসইউভি সিরসা থেকে পাঁচকুলায় রাম রহিমকে অনুসরণ করছিল, তাতেও বিপদের গন্ধ পায় পুলিশ। তাদের ভয় ছিল, ওই গাড়িগুলিতে অস্ত্র আছে, তাই রাস্তা বদলানোর পরিকল্পনা করে তারা। সেনা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা দিয়ে রাম রহিমকে নিয়ে যাওয়া হয়, তখনও ডেরা প্রধানের কম্যান্ডোরা পুলিশের গাড়ি ধরে ঝুলে পড়ে। ফের আর এক দফা মারামারি হয়।

অবশেষে বিশেষ চপারে করে রোহতক জেলে নিয়ে যাওয়া হয় ধর্ষণের অপরাধী রাম রহিমকে। তাঁর দলবল দীর্ঘক্ষণ বুঝতে পারেনি, তাঁকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।