গোয়ালিয়র: মধ্য প্রদেশের গোয়ালিয়র জেলায় এবার খোলা হল গডসে জ্ঞানশালা। এখানে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসের জীবন ও বিচারধারা সম্পর্কে স্থানীয় যুবক যুবতীদের অভিহিত করা হবে। মধ্য প্রদেশে ক্ষমতায় থাকা শিবরাজ সিংহ চৌহান সরকার এখনও এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করেনি।
এই গডসে জ্ঞানশালায় নাথুরাম গডসের নামে নিয়মিত জয়ধ্বনি দেওয়া হয়। তাঁর তথাকথিত দেশপ্রেমের কথা এখান থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচার করা হবে। মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসে হিন্দু মহাসভার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এর আগেও হিন্দু মহাসভা একাধিকবার তাঁর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা ও মহিমা কীর্তন করেছে। আর এবার গোয়ালিয়রের গডসে জ্ঞানশালায় তারা নাথুরাম গডসের ছবির পাশে রেখেছে দেশের অমর শহিদ ও বীর পুরুষ মহারানা প্রতাপ সিংহ, ঝাঁসির রানি লক্ষ্মী বাঈ, গুরু গোবিন্দ সিংহ, লালা লাজপত রাইয়ের মত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ছবি।
মধ্য প্রদেশে নাথুরাম গডসেকে নিয়ে বিতর্ক আজ নতুন কিছু নয়। হিন্দু মহাসভা গোয়ালিয়র প্রতি বছর গডসে জন্মদিবস পালন করে। ২ বছর আগে ভোপালের বিজেপি সাংসদ সাধ্বী প্রজ্ঞা গডসেকে দেশভক্ত বলে বিতর্ক তৈরি করেন। এ নিয়ে তুমুল বিতর্ক হয়। পরে এই গডসে মন্তব্যের জন্য সংসদে একাধিকবার ক্ষমা চাইতে হয় সাধ্বী প্রজ্ঞাকে। যদিও মধ্য প্রদেশের শিবরাজ সিংহ চৌহান সরকার এই গডসে জ্ঞানশালা সম্পর্কে এখনও কোনও পদক্ষেপ করেনি।
১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি সন্ধেয় দিল্লির বিড়লা হাউসে (এখনকার নাম গাঁধী স্মৃতি) নাথুরাম গডসে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীকে গুলি করে হত্যা করেন। সে সময় গাঁধী সন্ধের প্রার্থনার জন্য বিড়লা হাউস যাচ্ছিলেন। গডসে তখন খুব কাছ থেকে তাঁর ওপর তিনটি গুলি চালিয়ে তাঁকে হত্যা করেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, গাঁধীর জন্যই দেশভাগ হয়েছে, হিন্দু, শিখরা অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ১৯৪৯ সালের ১৫ নভেম্বর আম্বালা জেলে গডসের ফাঁসি হয়।