নয়াদিল্লি: মুম্বইয়ের হাজি আলি দরগার গর্ভগৃহে প্রবেশে পুরুষদের মতোই সমান অধিকার পাবেন মহিলারা। সুপ্রিম কোর্টে জানাল দরগা ট্রাস্ট। সোমবার প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি এল নাগেশ্বর  রাওকে নিয়ে গঠিত সর্বোচ্চ আদালতের বেঞকে এ কথা জানিয়ে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোগত বদল ঘটানোর জন্য চার সপ্তাহ সময় চায় তারা। আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। মেয়েদেরও দরগায় ঢোকার সমান অধিকার দিতে হবে, বম্বে হাইকোর্টের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে ট্রাস্টের আবেদনও খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ।


ট্রাস্টের তরফে প্রথম সারির কৌঁসুলি গোপাল সুব্রহ্মণ্যম জানান, তাঁদের পক্ষ থেকে দরগার ভিতরে মেয়েদের ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানিয়ে অতিরিক্ত হলফনামা  পেশ করা হয়েছে।

দরগার গর্ভগৃহে মেয়েদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে, এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ট্রাস্টকে আবেদন পেশ করার সুযোগ করে দিতে বম্বে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের মেয়াদ গত ১৭ অক্টোবর বাড়িয়ে দেয় শীর্ষ আদালত।

সুপ্রিম কোর্ট এর আগে আশা প্রকাশ করেছিল যে, বম্বে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানালেও শেষ পর্যন্ত প্রগতিশীল পদক্ষেপই করবে দরগা ট্রাস্ট। সুব্রহ্মণ্যমও আশ্বস্ত করেছিলেন এই  বলে যে, তাঁরা সামনের দিকেই এগতে চান, সব ধর্মীয়, পবি।ত্র গ্রন্থেই সাম্যের বাণী রয়েছে, এমন কিছুই করা হবে না, যা পিছনের দিকে টেনে নিয়ে যাবে আমাদের। বেঞ্চ এও বলেছিল, আপনারা পুরুষ-নারী, উভয়কেই একটি নির্দিষ্ট এলাকার পরে যেতে না দিলে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু একদলকে ঢুকতে দিয়ে অন্যদের আটকে দিলে সমস্যা হবে।

মহারাষ্ট্র সরকার মেয়েদের দরগার গর্ভগৃহে ঢুকতে না দেওয়ার পক্ষেই সওয়াল করে বলেছিল, কোরানে বলা থাকলে মেয়েদের সেখানে যাওয়ার অনুমতি না দেওয়াই বাঞ্ছনীয়।
এদিকে হাজি আলি দরগার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে  ভূমাতা রণরাগিনী ব্রিগেড নেত্রী তৃপ্তি দেশাই মহিলা পূণ্যার্থীদের, ভারতীয় সংবিধানের জয় আখ্যা দিয়েছেন। দেশের নানা ধর্মস্থানে লিঙ্গ ভেদ ঘুচিয়ে মেয়েদের প্রবেশাধিকার চেয়ে আন্দোলনে নামা এই নেত্রী বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট ও লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই চালানো মহিলা সংগঠনগুলির চাপেই হাজি আলি দরগার ট্রাস্টি এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হল। এবার এটা থেকে শিক্ষা নিয়ে শবরীমালা মন্দির ট্রাস্টিকেও মেয়েদের ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়ার আবেদন করব।

প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্রের শনি সিঙ্গনাপুর মন্দিরের গর্ভগৃহে মেয়েদের প্রবেশাধিকারের দাবিতে তাঁর আন্দোলন সফল হয়। তারপরই দিকে দিকে ধর্মস্থানে মেয়েদের ঢোকার দাবি জোরালো হতে শুরু করে।