কলকাতা ও নয়াদিল্লি: বৃহস্পতিবার বিজেপির নবান্ন অভিযান চলাকালে এক শিখ ব্যক্তির প্রতি পুলিশের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ সংক্রান্ত বিতর্কে এবার মুখমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বিহিত চেয়ে ট্যুইট ভারতীয় দলের প্রাক্তন ক্রিকেটার হরভজন সিংহর। মুখ্যমন্ত্রীকে ট্যাগ করে ভাজ্জির ট্যুইট, অনুগ্রহ করে বিষয়টি দেখুন। এমনটা মেনে নেওয়া যায় না।
তিনি একটি ভিডিো রিট্যুইট করেছেন, যাতে দেখা গিয়েছে এক পাগড়ি পরা এক  ব্যক্তিকে পুলিশ মারধর করছে। সেই সময় ওই ব্যক্তির মাথা থেকে পাগড়ি খুলে যায়। এরপরও পুলিশ তাঁর চুল ধরে টানে। আসলে, ওই ব্যক্তিকে পিস্তল সহ পুলিশ গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বিজেপির ওই কর্মসূচী নিয়ে তীব্র অশান্তি বাধে। মিছিলকারীদের পুলিশ বাধা দিলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। বোমা, ইটবৃষ্টি শুরু হয়। পাল্টা পুলিশের লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস, জলকামানে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। এমনই পরিস্থিতির মধ্যে অস্ত্র সহ এক ব্যক্তিকে পাকড়াও করে পুলিশ। সেই ব্যক্তির নাম বলবিন্দর সিংহ। ভিডিওতে যে ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে , তিনিই বলবিন্দর সিংহ। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে পিস্তল। যাঁর কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র মিলেছে, সেই বলবিন্দর সিংকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, বলবিন্দর ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের সঙ্গী, প্রিয়াঙ্গু পান্ডের দেহরক্ষী। বাজেয়াপ্ত হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রটি বৈধ না অবৈধ, তা নিয়েও শুরু হয়েছে বিতর্ক। আগ্নেয়াস্ত্র-সহ ধৃত বলবিন্দর সিংকে শুক্রবার আদালতে তোলা হয়। তাঁর দাবি, আগ্নেয়াস্ত্রের অল ইন্ডিয়া পারমিট আছে। অর্থাৎ সেটি ভারতের যে কোনও জায়গায় বৈধ। যদিও পুলিশ সূত্রে দাবি, হাওড়ায় বিজেপির অভিযানের সময় উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রটি ২০০৯ সালের ৩ জানুয়ারি জম্মু কাশ্মীরের রাজৌরির জেলাশাসক ইস্যু করেছিলেন।নথিতে স্পষ্টভাবে বলা আছে, এই আগ্নেয়াস্ত্র কোনওভাবেই রাজৌরি জেলার বাইরে নিয়ে যাওয়া যাবে না। অর্থাৎ‍ রাজৌরির বাইরে যে কোনও জায়গায়, অর্থাৎ‍ পশ্চিমবঙ্গে এই অস্ত্র আনাটা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। সব মিলিয়ে বিজেপির মিছিলে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের একদিন পরও তা নিয়ে বিতর্ক থামার কোনও লক্ষণ নেই। আজ ধৃত বলবিন্দর সিংকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
যাইহোক, দিল্লির বিজেপি নেতা ইমপ্রিত সিংহ বক্সি ওই ঘটনার ভিডিও ট্যুইট করে এর সঙ্গে যুক্ত পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
ইমপ্রিত ওই ভিডিও শেয়ার করে হরভজন সিংহকেও ট্যাগ করেন। এই ট্যুইটের পরিপ্রেক্ষিতেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এ ঘটনায় ব্যবস্থা গ্রহণের আর্জি জানিয়েছেন হরভজন।



রাজ্য পুলিশের তরফে পাল্টা ট্যুইট করে জানানো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। ধস্তাধস্তিতে নিজে থেকেই পাগড়ি খুলে যায়। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে আমাদের কোনও অফিসার পাগড়ি খোলার চেষ্টা করেননি। আমরা কোনও সম্প্রদায়ের ভাবাবেগে আঘাত করতে চাই না। গ্রেফতার করার আগে পুলিশ অফিসার ধৃতকে পাগড়ি পরে নিতে বলেন।