কোরাপুট:  একবছর আগে স্বামী হারিয়েছিলেন যশোদা নামের এক মহিলা। কিন্তু দুর্ভাগ্যের শেষ সেখানেই হয়নি। তাঁর জন্যে এই বছরটা অপেক্ষা করেছিল আরও বড় বিভীষিকা নিয়ে। লাইনচ্যুত জগদ্দলপুর-ভুবনেশ্বর এক্সপ্রেসে ছিলেন যশোদা এবং তাঁর দুই কিশোর ছেলে-মেয়ে। স্বামীকে হারানোর ঠিক একবছর বাদে গত পুরশু রাতের রেল দুর্ঘটনা যশোদার থেকে ছিনিয়ে নিল তাঁর দুই সন্তানকেও। ট্রেনে করে দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে বিজয়নগরম যাচ্ছিলেন যশোদা। গত পরশুর দুর্ঘটনায় লাইনচ্যুত হয় ট্রেনের ৯টি কামরা, মৃত্যু হয় ৩৯ জনের। ৩৯ জনের মধ্যে ছিল যশোদার দুই সন্তানও।

আশ্চর্যজনক ভাবে ২০১৬ সালের ২২ জানুয়ারি শারীরিক অসুস্থার কারণে মৃত্যু হয় যশোদার স্বামীর। ঠিক একবছর বাদে সেই ২২ জানুয়ারির সকালে সন্তান হারালেন যশোদা।

পোঙ্গল উপলক্ষে কালাহান্ডি জেলার ভবানীপটনা গ্রামে বাপের বাড়ি যান যশোদা। শনিবার ভবানীপটনা স্টেশন থেকে যশোদা তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে জুনাগড়-ভুবনেশ্বর এক্সপ্রেসের সাধারণ কামরায় ওঠেন। ভবানীপটনা স্টেশন থেকে জগদ্দলপুর-ভুবনেশ্বর এক্সপ্রেসের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় ওই ট্রেনের কামরাগুলো। রাত সাড়ে নটা নাগাদ ট্রেনটি রায়গড় স্টেশনে পৌঁছয়। ট্রেনেই রাতের খাওয়া সেরে গল্পগুজব করে, মোবাইলে অ্যালার্ম দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন তাঁরা। কিন্তু রায়গড় ছাড়ার কুড়ি মিনিটের মধ্যেই বিকট একটা আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় যশোদার। প্রথমে কী হয়েছে বুঝতে না পারলেও, পরে যশোদা বুঝতে পারেন ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছে।

চারিদিকে সেসময় মানুষের ভয়ার্ত আর্তনাদ শোনা যাচ্ছিল। ওই চেঁচামেচির মধ্যেই যশোদা কামরা থেকে বেরিয়ে আসলেও, তাঁর সন্তানরা আর বেরোতে পারেনি ওই মরণফাঁদ থেকে। জানা গিয়েছে, যশোদাতর দুই সন্তানেরই লাইনচ্যুত হওয়ার পরই মৃত্যু হয়।