নয়াদিল্লি: একপেশে তদন্ত রিপোর্ট ও জাল ভিডিওর ভিত্তিতে একজন মা তাঁর সন্তানকে শাস্তি দিতে পারে? কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে খোলা চিঠি পাঠিয়ে এই প্রশ্নই করলেন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-র ছাত্র সংসদের সভাপতি কানহাইয়া কুমার। রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত কানহাইয়া গতকাল বিশ্ব মাতৃ দিবসে গত ৯ ফেব্রুয়ারির বিতর্কিত অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তদন্ত রিপোর্টের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এ কথা লিখেছেন। তাঁর চিঠির ছত্রে ছত্রে ঝরে পড়েছে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ।


স্মৃতি ইরানি মন্তব্য করেছিলেন, সব পড়ুয়াই তাঁর সন্তানের মতো। এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কানহাইয়া লিখেছেন, ‘আপনার মাতৃস্নেহের উষ্ণতায় পড়াশুনো চালিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। কীভাবে পুলিশের লাঠি খেয়ে এবং ক্ষুদা সহ্য করে পড়াশুনো করতে হয়, তা শিখছি’।

স্মৃতিকে মাতৃ দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে ২৯ বছরের এই গবেষক তাঁকে ‘জাতীয়তাবাদ-বিরোধীদের’ ‘যুক্তি-বিরোধী’ মা হিসেবেও উল্লেখ করেছেন।

কানহাইয়া লিখেছেন, ‘আজ আমার এক বন্ধু জানতে চেয়েছে-মোদী জমানায় তো আমাদের নিজেদের মায়ের পাশাপাশি ভারত মাতা, গোমাতা, মা গঙ্গা এবং স্মৃতি মা রয়েছেন- এরপরও রোহিত ভেমুলা কীভাবে মারা যায়। আমি আপনার কাছে এর উত্তর জানতে চাইছি, কারণ এর জবাব আমার কাছে নেই। ওই জাতীয়তাবাদ-বিরোধী বন্ধু আরও বলেছে, স্মৃতির মন্ত্রক রোহিতকে শাস্তি দিতে সাতটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন এবং তার স্টাইপেন্ড সাত মাসের জন্য স্থগিত রাখার জন্যও দায়ী মন্ত্রী’।

কানহাইয়া লিখেছেন, ‘ভারতের মতো মহান দেশে একজন মা তাঁর সন্তানকে আত্মহত্যার পথে ঠেলে দিতে পারেন? একপেশে তদন্ত ও জাল ভিডিওর ভিত্তিতে মা কি তাঁর সন্তানকে শাস্তি দিতে পারেন? আপনার যে সন্তানরা ১১ দিন ধরে অনশন করছে, তারা এইসব প্রশ্নের উত্তর চাইছে। সময় পেলে উত্তর দেবেন’।

উল্লেখ্য, ৯ ফেব্রুয়ারি সংসদে জঙ্গি হামলায় ফাঁসির সাজা হওয়া আফজল গুরু সংক্রান্ত অনুষ্ঠান আয়োজন বিতর্কে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কানহাইয়া সহ বেশ কয়েকজন পড়ুয়াকে শাস্তি দিয়েছে। এর প্রতিবাদে পড়ুয়ারা অনশন করছেন। স্বাস্থ্যের অবনতির জন্য কানহাইয়া অবশ্য অনশন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।