নয়াদিল্লি: পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ ভারতীয় সেনাবাহিনীর। পাল্টা হামলার আশঙ্কায় পঞ্জাব সীমান্তে খালি করা হচ্ছে বেশ কয়েকটি গ্রাম। পাল্টা সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। নতুন করে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে ভারতের কোনও বড় শহরে কিংবা গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালাতে পারে পাকিস্তান। তাই এই পরিস্থিতিতে বাতিল হয়েছে সীমান্তে মোতায়েন সব সেনা জওয়ানের ছুটি।
পাকিস্তান স্বীকার করছে, তাদের দুই সেনার মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু, এটা মানতে চাইছে না যে ভারত সার্জিকাল স্ট্রাইক চালিয়েছে! কারণ, তাহলে তাদের ব্যর্থতা প্রকাশ্যে চলে আসবে। এই প্রেক্ষাপটে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সঙ্গে কথা বলেছেন পাক সেনা প্রধান রাহিল শরিফ! পাক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীরও। কিন্তু, পাকিস্তানের বুকে যে ক্ষত ভারত করল, তারপর কি পাল্টা হামলা করবে পাকিস্তান?
এমন সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ! কারণ, তাদের মতে পাকিস্তান তো স্বীকারই করছে না ভারত পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকেছে। উল্টে একে নিছকই সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন বলে চালানোর চেষ্টা করছে তারা। তাই এক্ষেত্রে পাল্টা কোনও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার ইঙ্গিত এখনও পর্যন্ত মিলছে না ইসলামাবাদের তরফে। আর যদি তারা সীমান্ত পেরোনোর চেষ্টা করেও, তাহলে ভারতীয় সেনার মুখে পড়তে হবে।
ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস লেফট্যানেন্ট জেনারেল রণবীর সিংহ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর কোনও জঙ্গি কার্যকলাপ বরদাস্ত করব না। আমরা যে কোনও মোকাবিলায় তৈরি।
এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান ওপার থেকে ভারি অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। যা সাধারণ সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে করা হয় না। এমনটা হলে পাঞ্জাব ও কাশ্মীরের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো পাকিস্তানের টার্গেট হতে পারে। তাই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে পঞ্জাব সীমান্তে বেশ কয়েকটি গ্রাম খালি করে দেওয়া হয়েছে। নিরাপদ দূরত্বে সরানো হয়েছে বাসিন্দাদের।
পাল্টা পাক হামলার আশঙ্কায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে পঞ্জাব সীমান্তে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে সব স্কুল। পাক সীমান্তে মোতায়েন সব সেনা জওয়ানদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সতর্কতা জারি করা হয়েছে পঠানকোটেও। সেখানকার হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। তৈরি থাকতে বলা হয়েছে জম্মু-কাশ্মীর ও পঞ্জাব পুলিশকে। দু’দেশের সম্পর্কে চাপাউতোরের জেরে বুধবার বাতিল হয়ে গিয়েছে ওয়াঘা সীমান্তের ‘বিটিং দ্য রিট্রিট’।
কিন্তু, ভারতের বিরুদ্ধে বদলা নিতে পাকিস্তান তাদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র ফের একবার ব্যবহার করতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। তা হল, ফের সীমান্তে জঙ্গি হামলা বা বড় শহরে বিস্ফোরণ। ছায়া যুদ্ধে বারবারই পটু পাকিস্তান সরাসরি লড়ার বদলে জঙ্গি ঢুকিয়েই ভারতকে রক্তাক্ত করে আসছে।
ভারতের সার্জিকাল স্ট্রাইকের পর লস্কর, জইশ কিংবা ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের মতো জঙ্গিদের ব্যবহার করে ভারতের কোনও বড় শহরে কিংবা গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালাতে পারে পাকিস্তান। বিশেষ করে সামনেই যেহেতু উৎসবের মরশুম, তাই জঙ্গিরা এর সুযোগ নিতে পারে।
তাই এখন বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে গোয়েন্দা ও নিরাপত্তাবাহিনীকে। কারণ, অনেকেই বলছেন, পেছন থেকে ছুরি মারায় পাকিস্তানের জুড়ি মেলা ভার।