নয়াদিল্লি: স্কুলে দুই শিক্ষকের হাতে শ্লীলতাহানির শিকার হওয়ার পর অবসাদে নবম শ্রেণির ছাত্রীর আত্মহত্যার অভিযোগের ঘটনায় রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর জানান, পূর্ণাঙ্গ তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়েছে।


এদিন স্কুলের বাইরে প্রতিবাদে সামিল হয় অভিভাবকরা। সেখানে ছিলেন নিহতের পরিবারের সদস্যরাও। তাঁরা এই ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ও প্রিন্সিপালের গ্রেফতার সহ সিবিআই তদন্তের দাবি জানান।


এদিকে, এই ঘটনায় তদন্তের আশ্বাস দিলেন দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া। এদিন বিধানসভায় এই ইস্যুতে প্রশ্ন করেন বিরোধী দলনেতা বিজেন্দ্র গুপ্তা। তিনি বলেন, দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মেয়ের শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছে নিহতের পরিবার। তিনি জানতে চান, এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার স্কুলের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাগ্রহণ করবে কি না।


উত্তরে সিসোদিয়া জানান, শিক্ষা দফতরকে ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি যোগ করেন, ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুতর। তিনি আশ্বাস দেন, স্কুলের গাফিলতি প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি একইসঙ্গে জানান, নিহত ছাত্রীর ওপর কোনও পড়াশোনার চাপ ছিল। বিজ্ঞান ও সমাজ বিজ্ঞানে ছাত্রীটি ‘কম্পার্টমেন্টাল’ পেয়েছিল।


সিসোদিয়া বলেন, গত ১৬ মার্চ, পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে ছাত্রীটি স্কুলে যায়নি। স্কলের প্রিন্সিপাল জানিয়েছেন, নবম শ্রেণির মোট ২৫০ জন পড়ুয়ার মধ্যে ২৮ জন বিভিন্ন বিষয়ে কম্পার্টমেন্ট পেয়েছে।


প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার উত্তর-পূর্ব দিল্লির স্কুলের নবম শ্রেণির ওই পড়ুয়া নয়ডায় নিজের বাসভবনে আত্মহত্যা করে। পরিবারের পক্ষ থেকে স্কুলের দুই শিক্ষক ও প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ পুলিশের কাছে দায়ের করা হয়েছে।


আত্মঘাতী ছাত্রীর বাবা-মায়ের অভিযোগ, রাজীব সহগল ও নীরজ আনন্দ নামে স্কুলের দুই শিক্ষক তাঁদের মেয়ের যৌন নিগ্রহ করেন। স্কুলের প্রিন্সিপালের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করা হলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে পড়ে। ওই ছাত্রীকে আরও বেশি নিগ্রহ করা হত বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, অভিযুক্ত দুই শিক্ষক ওই ছাত্রীকে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেন বলেও অভিযোগ বাবা-মায়ের।


এই ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল ওই ছাত্রী। গত মঙ্গলবার সন্ধেয় বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। নয়ডা পুলিশ এই ঘটনায় তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।