নয়াদিল্লি: সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াতের গতকালের মন্তব্যে তীব্র বিতর্ক মাথাচাড়া দিল। উত্তরপূর্ব ভারতে জনবিন্যাস ও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি ধর্মীয় ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অসমে বিজেপির চেয়েও বেশি দ্রুত বাড়ছে বদরুদ্দিন আজমলের অল ইন্ডিয়া ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এআইইউডিএফ), তাঁর এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ওই দল সহ নানা মহল।
'নর্থ ইস্ট রিজিয়ন অব ইন্ডিয়া-ব্রিজিং গ্যাপস অ্যান্ড সিকিওরিং বর্ডার্স' শীর্ষক যে সেমিনারে সেনাপ্রধান ওই মন্তব্য করেন, তার আয়োজন করে সেন্টার ফর জয়েন্ট ওয়ারফেয়ার স্টাডিজ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ইন্টিগ্রেটেড ডিফেন্স স্টাফ।
এই অঞ্চলের জনবিন্যাস গত চেহারা বদলানো যাবেনা, এই অভিমত জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, এআইইউডিএফ নামে একটা দল আছে। খেয়াল করে দেখবেন, বিজেপি বছরের পর বছর ধরে যে হারে বেড়েছে, ওরা একই সময়ে তার চেয়েও দ্রুত বেড়েছে। সংসদে দুজন সদস্য নিয়ে শুরু করে জনসংঘ যেখানে পৌঁছেছে, সেই তুলনায় অসমে অনেক দ্রুত গতিতে এগচ্ছে এআইইউডিএফ।
পাল্টা আজমলের তোপ, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধের ভিত্তিতে তৈরি একটি রাজনৈতিক দল বিজেপির চেয়ে দ্রুত এগলে সেনাপ্রধানের কেন তাতে মাথাব্যাথা?




ট্যুইট করে আজমল বলেছেন, জেনারেল বিপিন রাওয়াত রাজনৈতিক নেতার মতো কথা বলছেন। বিস্ময়কর এটা। বড় বড় দলগুলির অপশাসনের জন্যই বাড়ছে এআইইউডিএফ, আপের মতো বিকল্প দলগুলি।
তাঁর দলের বিধায়ক আমিনুল ইসলামের দাবি, এআইইউডিএফ শোষিত, নীচুতলার মানুষের জন্য লড়ছে বলেই বিজেপির চেয়ে দ্রুত বাড়ছে। আমাদের আশা, অসমের মানুষ জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে এআইইউডিএফকে বিপুল সমর্থন করবে, আমাদের দল একদিন রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে। সেনাপ্রধান কি সংবিধানের নির্দেশ ভেঙে রাজনীতিতে ইন্ধন দিচ্ছেন না?




এআইএমআইএম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়েইসিও সেনাপ্রধান 'রাজনৈতিক ব্যাপারে মাথা গলাচ্ছেন' বলে মন্তব্য করে তাঁর তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, সেনাপ্রধানের কাজ নয় একটি রাজনৈতিক দলের উত্থানের ব্যাপারে মন্তব্য করা। গণতন্ত্র, সংবিধানে রাজনীতির অধিকার আছে সবার। সেনাপ্রধানের তাতে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। সেনাবাহিনীকে সবসময় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নেতৃত্বে চলতে হবে।




যদিও এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনীর তরফে বলা হয়েছে, জেনারেল রাওয়াতের বক্তব্যে রাজনীতি বা ধর্মের কোনও ব্যাপার নেই। উনি সেমিনারে শুধু সেখানকার পরিস্থিতি ও সংহতির প্রসঙ্গ টেনেছেন।