নয়াদিল্লি: রাজধানী দিল্লির একটি অভিজাত ক্লাবে বিশেষ আমন্ত্রণ পেয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে যোগ দিতে গিয়েছিলেন এক মহিলা। পরণে মেঘালয়ের খাসি সম্প্রদায়ের মহিলাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘জেনসেম’। কিন্তু ক্লাব কর্মীদের মনে হল, ওই পোশাকটা ‘পরিচারিকাদের মতো’।  তাই তাঁকে মধ্যাহ্নভোজের আসর ছেড়ে চলে যেতে বলা হল। ওই মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন  ডক্টর নিবেদিতা বরঠাকুর সোন্ধি। তাঁর বাড়িতে সন্তানের গভর্নর হিসেবে কাজ করেন তাইলিন লিংডো। কিন্তু ক্রমে ক্রমে তিনি হয়ে উঠেছেন বরঠাকুরের পরিবারের সদস্য। গত ২৫ জুন দিল্লির গলফ ক্লাবের মধ্যাহ্নভোজের আমন্ত্রণ পেয়ে লিংডোকে নিয়ে এসেছিলেন নিবেদিতা বরঠাকুর। কিন্তু এখানে যে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে তা ভাবেননি নিবেদিতা বা লিংডো-কেউই।

ঘটনার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নিবেদিতা। তিনি বলেছেন, দুইজন কর্মী লিংডোর কাছে এসে বললেন, যে তাঁকে পরিচারিকার মতো লাগছে। তাই লিংডো এখানে থাকতে পারবেন না।



লিংডো সাংবাদিকদের বলেছেন, তাঁরা যখন মধ্যাহ্নভোজ সারছিলেন, তখনই তাঁকে চলে যেতে বলা হয়। ম্যানেজার এসে বলেন, এই পোশাকে এখানে আসার অনুমতি নেই। তাই বাইরে বেরিয়ে যেতে হবে তাঁকে।

লিংডো বলেছেন, পুরো ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তিনি বলেছেন, তিনি দেশে-বিদেশে বহু জায়গায় গিয়েছেন। কিন্তু কোথাও এ ধরনের কথা তাঁকে শুনতে হয়নি।

ঘটনার জেরে বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ। এক বিবৃতিতে ক্লাব জানিয়েছে, পরিস্থিতি আরও ‘ভালোভাবে সামলাতে’ পারতেন কর্মীরা। ওই কর্মীদের কাছে ঘটনার ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। শৃঙ্খলাভঙ্গের ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে।

ক্লাবের আরও দাবি,অতিথিকে ক্লাব ছেড়ে যেতে বলা হয়নি।

ক্লাব বলেছে, লিংডো যাঁর অতিথি হিসেবে এসেছিলেন, তাঁর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করা হয়েছে।

যদিও নিবেদিতা বলেছেন, তাঁর বা লিংডোর সঙ্গে কোনও যোগাযোগই করেনি ক্লাব কর্তৃপক্ষ।

ফেসবুক পোস্টে নিবেদিতা জানান, লিংডো তাঁর পোশাক নিয়ে খুবই গর্বিত। লন্ডন থেকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী-সর্বত্রই তিনি জেনসেম পরেই ঘুরেছেন। কিন্তু দিল্লিতে ওই পোশাকের কারণেই তাঁকে গল্ফ ক্লাব থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হল!

নিবেদিতা বলেছেন, মধ্যাহ্নভোজে আমন্ত্রিত হিসেবে গিয়েছিলেন লিংডো। এরপরও তাঁকে অপমান করা হল।

নিবেদিতা আরও বলেছেন, একজন ভারতীয়কে তাঁর পোশাক দিয়ে বিচার করা হচ্ছে এবং তাঁর সঙ্গে পরদেশীর মতো আচরণ করা হচ্ছে-এটা খুবই দুঃখজনক।