জসদান ও ভুজ: আমি চা বিক্রি করব। কিন্তু ওদের মতো দেশ বিক্রি করব না। গুজরাতের নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ করলেন নরেন্দ্র মোদী।


সোমবার কচ্ছের ভুজ, রাজকোটের জসদান, আমরেলির ছালালা এবং সুরাতের কাকোদারায় নির্বাচনী জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে চিন, লস্কর-ই-তৈবা প্রধান হাফিজ সঈদ, ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ও দুর্নীতি নিয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন। তবে, মোদী এদিন বিশেষকরে কংগ্রেসকে নিশানা করেন তাঁর ‘চা-ওয়ালা’ মীম বানানো নিয়ে। জসদানে মোদী বলেন, প্রধান বিরোধী দল তাঁকে এই জন্য টার্গেট করছে কারণ তিনি অতি-সাধারণ ঘর থেকে উঠে এসেছেন। গরিব মায়ের গর্ভে তাঁর জন্ম হয়েছে বলে।


কংগ্রেসকে মোদীর কটাক্ষ, একজন চা-ওয়ালা দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন বলে ওদের অস্বস্তি হচ্ছে। বইতে পড়েছি, উঁচু শ্রেণির হাতে কেমনভাবে হয়রান হতে হয় নিচুতলার শ্রেণিদের। কিন্তু, কখনও কল্পনাও করতে পারিনি, ওরা এত নিচে নামতে পারে। মোদী জানান, তিনি প্রতিনিয়ত হুমকি পান যে, তাঁকে ফের চা-ওয়ালা বানিয়ে দেওয়া হবে। এই প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, আমি ওদের বলতে চাই, আমি মোদী চা বেচতে তৈরি। কিন্তু, কখনও গোটা দেশ বেচার মত অপরাধ করব না।


গুজরাতে বিধানসভা নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। আসন্ন ভোটে গুজরাতের তখতে কোন দল বসবে, সেদিকে তাকিয়ে গোটা দেশ। গুজরাতে নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত কংগ্রেস থেকে বিজেপি, প্রত্যেক দলই। এরমধ্যে আজকে এক নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বললেন, এই নির্বাচনে মানুষ দেখবে উন্নয়নের সঙ্গে পরিবারতন্ত্রের লড়াই। এখন মানুষ কাকে নির্বাচিত করবে সেটা সময়ই বলে দেবে।


আজ গুজরাতের কচ্ছ জেলার ভুজ শহরে বিজেপির এক জনসভায় বক্তব্য রাখছিলেন মোদী। সেখানেই তিনি কংগ্রেসকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণের সঙ্গে সম্প্রতি সেখানে গিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেস সহসভাপতি রাহুল গাঁধীর তোলা বিভিন্ন অভিযোগেরও জবাব দেন। তিনি দাবি করেন, গুজরাতে এসে সে রাজ্যের ছেলের ওপর দুর্নীতির অভিযোগ তোলার জন্যে গুজরাতবাসীরা রাহুলকে কখনও ক্ষমা করবেন না। তিনি আরও দাবি করেন, তিনি কখনও কোনও বেআইনি কার্যকলাপের সঙ্গে নিজেকে জড়াননি। তাঁর বিরুদ্ধে অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে বিরোধীরা। প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিনের প্রচারে কং সহ সভাপতি রাফালে কেলেঙ্কারির কথা উল্লেখ করে বিজেপির বিরুদ্ধে একাধিকবার তোপ দেগেছেন।


গুজরাতে প্রথম দফার নির্বাচন রয়েছে আগামী ৯ ডিসেম্বর। তার আগে যুযুধান দুপক্ষই শেষমুহূর্তে কাউকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে নারাজ। কংগ্রেস যখন বিজেপিকে রাফালে নিয়ে বিঁধছে, তখন মোদী ডোকলাম প্রসঙ্গ উল্লেখ করে রাহুলের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, ভারতীয় সেনারা যখন ৭০ দিন চিনা সেনাদের সঙ্গে সীমান্তে স্নায়ুর লড়াইয়ে ব্যস্ত ছিলেন, তখন কেন তিনি চিনা দূতদের জড়িয়ে ধরেছিলেন?


আজ এবং বুধবার একাধিক জায়গায় জনসভা রয়েছে মোদীর।১৮২ আসন বিশিষ্ট গুজরাত বিধানসভার নির্বাচন দুটি পর্যায়ে হবে। প্রথম দফার নির্বাচন হবে ৯ ডিসেম্বর, দ্বিতীয় দফা হবে ১৪ ডিসেম্বর। ভোটগণনা রয়েছে আগামী ১৮ ডিসেম্বর।