নয়াদিল্লি: চতুর্থ দফার লকডাউনের শেষ দিন ‘মন কি বাত’-এ কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প আয়ুষ্মান ভারতের কথা উল্লেখ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর দাবি, এই প্রকল্প চালু না হলে দেশের গরিবদের চিকিৎসার জন্য নিজেদের পকেট থেকে ১৪,০০০ কোটি টাকা খরচ করতে হত।


আজ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে দশকের পর দশক ধরে গরিব মানুষরা এটা ভেবে দিন কাটাচ্ছেন, তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়লে কী হবে? তাঁরা রুটি-রুজির ব্যবস্থা করবেন, না চিকিৎসার খরচ জোগাবেন? তাঁদের এই দুর্দশার কথা ভেবেই দেড় বছর আগে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু করা হয়। কয়েকদিন আগেই এই প্রকল্পের সুবিধাভোগীর সংখ্যা এক কোটি পেরিয়ে গিয়েছে। এক কোটি রোগীর অর্থ আমাদের দেশের এক কোটিরও বেশি পরিবার উপকৃত হয়েছে। এক কোটি রোগী মানে কি জানেন? এত স্বল্প সময়ের মধ্যে দু’টি করে সিঙ্গাপুর ও নরওয়ের মোট জনসংখ্যার বেশি মানুষের চিকিৎসা করা সম্ভব হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘আমাদের দেশের গরিব মানুষকে যদি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরেও চিকিৎসার খরচ দিতে হত, তাঁরা যদি বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ না পেতেন, তাহলে তাঁদের পকেট থেকে ১৪,০০০ কোটি টাকা দিতে হত। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প গরিবদের এত টাকা বাঁচিয়েছে। এই প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের পাশাপাশি চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসাকর্মীদেরও অভিনন্দন জানাতে চাই।’

আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, ‘এই প্রকল্পের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, দেশের সর্বত্র একইরকম চিকিৎসা পাওয়া যায়। বিহারের একজন ব্যক্তি তাঁর নিজের রাজ্যে যে চিকিৎসা পেতে পারতেন, কর্ণাটকেও সেটা পাবেন। একইভাবে মহারাষ্ট্রের একজন দুঃস্থ ব্যক্তি তামিলনাড়ুতে গিয়েও চিকিৎসা পাবেন। যে এক কোটি মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন, তাঁদের ৮০ শতাংশই গ্রামীণ অঞ্চলের। ৫০ শতাংশ আমাদের মা, বোন, মেয়ে। বেশিরভাগ অসুস্থ ব্যক্তির অসুখই সাধারণ ওষুধে সারত না। ৭০ শতাংশ ব্যক্তিরই অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। এটা থেকেই আপনারা আন্দাজ করতে পারেন, কত মানুষ সমস্যামুক্ত হয়েছেন।’

মণিপুরের একটি শিশুর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘চুরা-চাঁদপুরের ৬ বছরের শিশু কেলানসাং আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের ফলে নতুন জীবন লাভ করেছে। এই বয়সেই তার মস্তিষ্কের কঠিন অসুখ হয়েছিল। তার বাবা একজন দিনমজুর এবং মা তাঁতি। তাঁদের পক্ষে ছেলের চিকিৎসার খরচ জোগাড় করা সম্ভব ছিল না। তবে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের ফলে তাঁদের ছেলে বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ পেয়েছে।’