আমদাবাদ: গুজরাতে রাজ্যসভা নির্বাচনের কয়েক ঘন্টা আগে সংখ্যার লড়াই আরও জমে উঠেছে। কর্নাটক থেকে ফিরে আসা দলের ৪৪ বিধায়কের সঙ্গে আনন্দের রিসর্টে বৈঠক করলেন কংগ্রেস প্রার্থী আহমেদ পটেল। বৈঠকের পর তাঁর দাবি, রাজ্যসভায় পুনর্নিবার্চিত হওয়ার ব্যাপারে তিনি আত্মবিশ্বাসী। সংখ্যার দিক থেকে পটেলের নির্বাচিত হওয়ার পুরো সম্ভাবনাই রয়েছে।
পটেল বলেছেন, বিজেপি চেষ্টা বিফল করে তিনি তাঁর জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। তাঁর দাবি, প্রত্যাশার তুলনায় অনেক বেশি ভোট পাবেন তিনি। পটেল বলেছেন, কংগ্রেসের ৪৪ জন বিধায়কের পাশাপাশি জেডি(ইউ), এনসিপি এবং শঙ্করসিন বাঘেলার সমর্থন তিনি পাবেন।
কিন্তু এনসিপি সম্পর্কে তাঁর দাবি সম্পর্কে কিছুটা হলেও সংশয় তৈরি হয়েছে। কারণ, দলের দুই বিধায়কের মধ্যে একজন কান্ডাল জাদেজার দাবি, তাঁকে দলের হাইকম্যান্ড বিজেপি প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিতে বলেছে। যদিও এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের কন্যা সুপ্রিয়া সুলে সাফ জানিয়েছেন, তাঁদের দলের বিধায়করা কংগ্রেসকেই সমর্থন দেবে।
আগামীকাল গুজরাতে রাজ্যসভার তিনটি আসনের জন্য ভোট হবে। জিততে হলে কোনও প্রার্থীকে ৪৫ টি ভোট পেতে হবে।
ছয় কংগ্রেস বিধায়ক পদত্যাগ করায় রাজ্য বিধানসভার সদস্য সংখ্যা ১৮২ থেকে কমে হয়েছে ১৭৬। তাঁদের মধ্যে তিনজন বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। ওই ছয়জন রাজ্যসভার নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না।
দুটি আসন থেকে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির জয় নিশ্চিত। বিধানসভায় বিজেপির সদস্য সংখ্যা ১২১। তাই প্রয়োজনীয় ভোটের থেকে তাদের হাতে রয়েছে ৩১ টি অতিরিক্ত ভোট।
তৃতীয় আসনে বিজেপি প্রার্থী করেছে কংগ্রেস ছেড়ে সদ্য বেরিয়ে আসা বলবন্তসিন রাজপুতকে। তিনি কিছুদিন আগেই বিধানসভায় কংগ্রেসের চিফ হুইপ ছিলেন। তাঁর সঙ্গেই লড়াই কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেলের।
গুজরাত বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা ভূপেন্দ্র যাদব বলেছেন, সংখ্যা তাঁদের সঙ্গেই রয়েছে। প্রয়োজনের চেয়ে তিনজন বেশি বিধায়কের সমর্থন বিজেপির কাছে রয়েছে। তাই জয়ের ব্যাপারে তাঁরা আশাবাদী। মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানির দাবি, তিনটি আসনেই জিতবে বিজেপি। পটেল হারবেন।
ভোটের আগে গাঁধীনগরে পৌঁছে গিয়েছেন অমিত শাহ। তিনি দলের সমস্ত বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বিজেপির আশা, আনন্দে রিসর্টে কংগ্রেসের যে ৪৪ জন বিধায়ক রয়েছেন তাঁদের মধ্যে অন্তত তিনজন দলের হুইপ বা নির্দেশ উপেক্ষা করেই তাদের প্রার্থীকে ভোট দেবেন।
এমনটা হলে পটেলকে এনসিপির দুই বিধায়ক, জেডি(ইউ)-র এক বিধায়ক ও বাঘেলার ওপর নির্ভর করতে হবে।
কংগ্রেসের সাম্প্রতিক ভাঙন এই বাঘেলাই ঘটিয়েছেন বলে রাজনৈতির মহলের অনুমান। তিনিও তাঁর তাস গোপনই রেখেছেন।
এনসিপি দলের বিধায়কদের ওপর এখনও পর্যন্ত কোনও হুইপ জারি করেনি। জেডি(ইউ) বিধায়ক আহমেদ পটেলের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। কয়েকদিন আগে তিনি বলেছিলেন যে, পটেলকেই সমর্থন করবেন তিনি।
তৃতীয় আসনের ভোটে কোনও প্রার্থীই যদি প্রয়োজনীয় ৪৫ বিধায়কের সমর্থন না পান তাহলে দ্বিতীয় পছন্দের ভোটের গণনা হবে। সেক্ষেত্রে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য বিজেপিরই পাল্লা ভারি।
এই আসনে পটেল হারলে তা কংগ্রেসের পক্ষে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে ধাক্কা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি তাদের বিধায়ক ভাঙানোর চেষ্টা করছে। যদিও বিজেপি ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।