মালকানগিরি: কিছুদিন আগেই ওড়িশার কালাহান্ডির দানা মাঝির কাহিনী সারা দেশকে লজ্জিত করেছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অ্যাম্বুলেন্স দিতে অস্বীকার করায় দরিদ্র দানা মাঝি স্ত্রীর মরদেহ নিজের কাঁধে তুলে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। সঙ্গে ছিল ১২ বছরের মেয়ে। প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার পর মিডিয়া ও স্থানীয়দের উদ্যোগে গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়। এই ঘটনার রেশ কাটতে কাটতে না কাটতেই আরও এক অমানবিক ঘটনা সেই ওড়িশাতেই। এবার সাত বছরের শিশুকন্যার দেহ প্রায় ছয় কিলোমিটার পথ কোলে করে বহন করতে বাধ্য হলেন শোকার্ত বাবা-মা।
জানা গেছে, মালকানগিরি জেলা হাসপাতালে যাওয়ার পথে সাত বছরের বর্ষা খেমুডু মারা যায়। এ কথা জানার পরই চালক বর্ষার বাবা-মাকে অ্যাম্বুলেন্স থেকে নেমে যেতে বলেন। এর আগে মালকানাগিরির ঘুষাপল্লির বাসিন্দা অসুস্থ বর্ষাকে মিতালি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে মালকানগিরি জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সে করে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ছোট্ট বর্ষা। তার বাবা দীনবন্ধু খেমেডু বলেছেন, বর্ষার মারা গিয়েছে জানতে পেরেই চালক আমাদের গাড়ি থেকে নেমে যেতে বলেন।
শোকার্ত বাবা-মা যখন মেয়ের দেহ কোলে নিয়ে হাঁটছেন তখন স্থানীয়দের চোখে তা ধরা পড়ে। তাঁরা দীনবন্ধুকে জিজ্ঞাসা করে সব জানতে পারেন। তাঁরাই স্থানীয় বিডিও এবং মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বর্ষার দেহ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়।
এই ঘটনার ব্যাপারে জেলা কালেক্টর জেলার মুখ্য মেডিক্যাল আধিকারিক (সিডিএমও) কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সিডিএমও এই ঘটনায় অ্যাম্বুলেন্সের চালক ছাড়াও এক ফার্মাসিস্ট ও অ্যাটেন্ডেন্টের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন। ফার্মাসিস্ট ও অ্যাটেন্ডেন্ট ওই অ্যাম্বুলেন্সে ছিলেন। জেলা কালেক্টর ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।