নয়াদিল্লি: ফের বৃদ্ধি পেল ডোকালাম সংঘাতের মাত্রা। চিন-সীমান্ত লাগোয়া সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশে সেনা মোতায়েন বাড়াল ভারত। একইসঙ্গে, বাহিনীকে ‘চূড়ান্ত প্রস্তুত’ থাকতে বলা হয়েছে।


কেন্দ্রীয় সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, গত কয়েকদিন যাবৎ ডোকালাম ইস্যুতে ভারতকে বারংবার কথায় আক্রমণ করে চলেছে বেজিং। এমনকী, বিতর্কিত অঞ্চল থেকে ভারত সেনা প্রত্যাহার না করলে চিনা সেনা যে অগ্রসর হবে, তেমনও ইঙ্গিত দিয়েছে সেদেশের সরকারি সংবাদমাধ্যম।


পিটিআই সূত্রে খবর, এরপরই জরুরি বৈঠকে বসে কেন্দ্র। সেখানে স্থির হয়, পরিস্থিতি বিচার করে চিন-সীমান্তে বাহিনী মোতায়েন বৃদ্ধি করা হবে। এরপরই, সিকিম থেকে অরুণাচল প্রদেশ-- প্রায় ১৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ চিন-সীমান্তে বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শীর্ষ সরকারি আধিকারিক বলেন, সিকিম ও অরুণাচলে চিন সীমান্তে বাহিনী মোতায়েন বৃদ্ধি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, সুকনা-স্থিত সেনার ৩৩ কোর এবং অরুণাচল ও অসম থেকে যথাক্রমে সেনার ৩ এবং ৪ কোরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এই অঞ্চলটি সুরক্ষিত করার জন্য।


বাহিনী বাড়ানোর খবর জানালেও, বৃদ্ধির পরিমাণ সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। ঠিক যেমন তাদের ‘অপারেশনাল ডিটেইলস’ বা বিস্তারিত দায়িত্ব খোলসা করা হয়নি। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের জানিয়েছেন, চিন-সীমান্তের জন্য সবসময় প্রায় ৪৫ হাজার জওয়ানকে তৈরি রাখা থাকে।


যদিও, তাদের যে সবসময় মোতায়েন করা হয় তেমনটা নয়। কিন্তু, পালা পালা করে এই বাহিনীকে চিন-সীমান্তের দূর্গম পার্বত্য পরিবেশকে মানিয়ে নেওয়ার বিশেষ প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি দেওয়া হয়। যেমন, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯ হাজার ফুট উচ্চতায় টানা ১৪-দিন থাকা। যাতে, এই বাহিনী সঙ্গে সঙ্গে যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য তৈরি থাকে।


ওই কেন্দ্রীয় আধিকারিককে উদ্ধৃত করে পিটিআই আরও জানিয়েছে, সীমান্তে বাহিনী মোতায়েন বৃদ্ধি পেলেও, ডোকালামে আপাতত কোনও বাহিনী মোতায়েন বাড়ানো হয়নি। ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, সেখানে আগের মতই ৩৫০ জওয়ান মোতায়েন রয়েছে।


প্রসঙ্গত, গত ২ মাস ধরেই ডোকালাম ইস্যুতে সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দুদেশের সেনার মধ্যে। গত ১৬ জুন, ডোকালামে চিনের একটি সড়ক নির্মাণের প্রচেষ্টাকে আটকে দেয় ভারত। যারপর থেকেই দুদেশের মধ্যে হুমকি-পাল্টা হুমকি শুরু হয়।


ডোকালামের আধিপত্য তাদের বলে দাবি করে আসছে চিন। ভারত ও ভূটান তা খণ্ডন করে চলেছে। ভারতকে অবিলম্বে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে বলে জানিয়ে আসছে চিন। তার মধ্যেই চিন-সীমান্তে বাহিনী মোতায়েন বাড়িয়ে বেজিংকে কড়া জবাব দিল নয়াদিল্লি বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।