নয়াদিল্লি: ভারত সীমান্ত সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়। দু দেশ যদি আগে সিকিম সীমান্ত থেকে সেনা সরাতে রাজি হয়, তাহলে চিনের সঙ্গে আলোচনার জন্য তৈরি ভারত। আজ রাজ্যসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে সংযোজনীর জবাবে এমনই জানালেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। তিনি বলেন, ২০১২ সালে ভারত, চিন ও ভুটানের মধ্যে এই মর্মে লিখিত বোঝাপড়া হয়েছিল যে, তিন পক্ষের সংযোগস্থলের সীমানা নিয়ে পরস্পর আলোচনার মাধ্যমেই তারা একসঙ্গে সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু তারপরও চিন একতরফা ওখানকার চরিত্র বদলে দিতে চাইছে, যার ফলে চ্যালেঞ্জের মুখে ভারতের নিরাপত্তা। চিন এই অঞ্চলে আগেও রাস্তা তৈরি করেছে। বুলডোজার ও এলিভেটর নিয়ে এসেছে তারা। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করাই যায়। তবে তার আগে দু পক্ষকেই সেনা সরাতে হবে।

সুষমা দাবি করেছেন, তিন দেশের সংযোগস্থল নিয়ে ভারতের অবস্থান মোটেই 'অযৌক্তিক' নয়। সব দেশ এই ইস্যুতে তার পাশেই দাঁড়িয়েছে। তারা বুঝতে পেরেছে, ভারত এ ব্যাপারে যা বলছে, তাতে অন্যায় কিছু নেই। আইন আমাদের পক্ষে। ভারত ও চিনের মধ্যে সীমানা নির্ধারণ এখনও চূড়ান্ত হয়নি, দু দেশ নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সেটা করে ফেলবে, অন্যদিকে চিন ও ভুটানের মধ্যে সীমানা নির্ধারণও দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পথেই হবে। সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান করতে হবে, এটাই ভারতের মনোভাব। মতপার্থক্য যাতে বিবাদ, সংঘাতে না গড়ায়, সেটাই চায় ভারত। কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে ডোকালাম সমস্যার চেষ্টা চলছে। আমরা কথা বলতে আগ্রহী। কিন্তু আগে তো দুপক্ষকে নিজ নিজ সেনা সরিয়ে নিতে হবে। ভারত যে মূহূর্তে জানতে পারে, এক সীমান্ত, এক রাস্তা (ওয়ান বর্ডার, ওয়ান রোড) প্রকল্পটি চিন-পাকিস্তান ইকনমিক করিডরেরই অংশ, সঙ্গে সঙ্গে তার বিরোধিতা করে বলেও জানান সুষমা।

বিদেশমন্ত্রী আরও বলেছেন, চিন যদি ক্রমাগত তিন দেশের সংযোগস্থলের অবস্থান বদল করতে থাকে, তাহলে ভারতের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হবে। ভুটানও এ বিষয়ে চিঠি দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে। চিন তিন দেশের সংযোগস্থলটাকেই বদলে দিয়ে ওই অঞ্চলে নিজেদের অধিকার কায়েম করতে চাইছে। সেই কারণেই বিরোধিতা করছে ভারত।

বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গোপাল বাগলে বলেছেন, সীমান্ত সংঘাত নিয়ে ভুটান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে ভারত। চিনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় ভারত। আস্তানায় সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন সম্মেলনে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ভারত ও চিন বলেছিল, সীমান্ত নিয়ে মতভেদ যেন সংঘাতে পরিণত না হয়ে সেদিকে নজর দেওয়া হবে। দায়িত্বশীল সবপক্ষই শান্তি চায়।