হায়দরাবাদ: এই প্রথম ভারতীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানে চালকের আসনে মহিলারা। যুদ্ধবিমান চালাবেন আভানি চতুর্বেদী, ভাবনা কান্থ ও মোহনা সিংহ। ভারতীয় বায়ুসেনায় যুদ্ধবিমানের প্রথম তিন মহিলা পাইলট হলেন এঁরা। আজই তাঁদের পাইলট প্রশিক্ষণ শেষ হল। গ্র্যাজুয়েশন প্যারেডে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁদের বায়ুসেনার যুদ্ধবিমানের পাইলটের স্বীকৃতি দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকর।


এঁরা প্রত্যেকেই প্রশিক্ষণের প্রথম ধাপ সাফল্যের সঙ্গে পেরিয়ে গেছেন। তিন কন্যারই ১৫০ ঘন্টা ওড়ার অভিজ্ঞতা আছে।
গত ২৫ বছর ধরেই মহিলা পাইলট রয়েছে বিমানবাহিনীতে। কিন্তু হেলিকপ্টার বা পণ্যবাহী বিমান ছাড়া আর কিছুই ওড়ানোর সুযোগ মেলেনি তাঁদের। নরেন্দ্র মোদী সরকারের জমানায়, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্রীকর ও বায়ুসেনা-প্রধান অরূপ রাহা নিয়ম ভাঙার সিদ্ধান্ত নেন। ঠিক হয়, এ বার যুদ্ধবিমানের ককপিটও খুলে দেওয়া হবে মহিলাদের জন্য। শেষ ধাপে ছ’জন মহিলা ক্যাডেট দৌড়ে ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ইতিহাস তৈরির সুযোগ আদায় করে নিয়েছেন মোহনা, আভানি ও ভাবনা।

বায়ুসেনার কর্তারা জানিয়েছেন, মহিলা বলে তাঁদের বিশেষ কোনও সুবিধা দেওয়া হবে না। যেকোনও জায়গায়, যেকোনও পরিস্থিতিতেই তাঁদের পাঠানো হবে। প্রশিক্ষণের সঙ্গে সঙ্গে বিপদ এসেছে, মুহূর্তের সামান্য ভুলে মৃত্যুর মুখেও পৌঁছে গেছেন তাঁরা। তা-ও পেরিয়ে এসেছেন এই তিন বীরাঙ্গনা।

এই প্রসঙ্গে আভানি জানিয়েছেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা, ‘‘এক দিন দ্বিতীয় বারের জন্য আকাশে ওড়ার আগে মাটিতে অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছিল। সে দিন চড়া রোদ ছিল। টেক অফ পয়েন্টে গিয়ে সবুজ সঙ্কেতও পেয়ে গিয়েছি। হঠাৎ শুনি বিপদঘন্টি। ককপিটের উপরে যে স্বচ্ছ ঢাকনা থাকে সেই ‘ক্যানপি’ খোলা ছিল। সঙ্গে সঙ্গে বিমান থামাই। পরে ভাবছিলাম, বিমান থামাতে এক মুহূর্ত দেরি হলে বা ক্যানপি খোলা অবস্থায় আকাশে উড়লে ভয়ঙ্কর ফল হতো।’’

যুদ্ধবিমান ওড়ানোর প্রথম পর্যায়ের প্রশিক্ষণ পর্ব শেষ করার পর, চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রশিক্ষণ নিতে তিন কন্যা হায়দারাবাদ থেকে এ বার কর্নাটকের বিদারে যাবেন। এখনও পর্যন্ত কোনও মহিলার পা পড়েনি সেখানে।