নয়াদিল্লি: পাকিস্তান থেকে এ দেশে লাগাতার সীমান্ত-সন্ত্রাসবাদ পাচার নিয়ে ভারতে নিযুক্ত পাক রাষ্ট্রদূত আবদুল বসিতের কাছে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানাল ভারত। কূটনীতির ভাষায় বসিতকে ভারতের তীব্র উষ্মা প্রকাশ করেছেন বিদেশ সচিব এস জয়শঙ্কর। বসিতকে ডিমার্চ দিয়েছেন তিনি।
ভারতের হাতে পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদের টাটকা উদাহরণ সম্প্রতি কাশ্মীর উপত্যকায় নিরাপত্তাবাহিনী ও জঙ্গিদের সংঘর্ষ চলাকালে ধৃত লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি বাহাদুর আলি। জেরায় সে স্বীকার করেছে যে, সে পাকিস্তানের নাগরিক। তার স্বীকারোক্তিকে হাতিয়ার করেছে ভারত। ডিমার্চেতে বাহাদুরের উদাহরণ দেখিয়ে পাকিস্তানকে চেপে ধরেছে ভারত। সে দেশের মাটি থেকে ভারতে সন্ত্রাসবাদ পাচার বন্ধ করতে হবে বলে বসিতের কাছে জোরালো দাবি তুলেছেন জয়শঙ্কর।
এদিন বসিতকে সাউথ ব্লকে তলব করেন জয়শঙ্কর। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ বলেন, ডিমার্চে লস্কর জঙ্গি তথা পাক নাগরিক বাহাদুর আলির প্রসঙ্গ বিশেষ ভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
তাতে বলা হয়েছে, গত ২৫ জুলাই একে ৪৭, গ্রেনেড লঞ্চার, গ্রেনেড ও তার সঙ্গে অত্যাধুনিক যোগাযোগের যন্ত্রপাতি সমেত কাশ্মীরে ধরা পড়ার পর পাকিস্তানের জিয়া বাগ্গা গ্রামের ছেলে বাহাদুর জেরায় স্বীকার করেছে, লস্কর-ই-তৈবার শিবিরে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর তাকে ভারতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকে সে লস্করের অপারেশন রুমের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সেখান থেকে ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর ওপর হামলা ও সন্ত্রাসবাদী আক্রমণ চালানোর ব্যাপারে নির্দেশ নিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকে কাশ্মীরে বিক্ষোভ, অশান্তির পিছনে পাকিস্তান থেকে উসকানি, মদত আসছে বলে অভিযোগ নয়াদিল্লির। খোদ পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফে যেভাবে বুরহানকে শহিদ বলে মর্যাদা দিয়ে কাশ্মীর একদিন পাকিস্তানের অংশ হবে বলে মন্তব্য করেছেন, তা কাশ্মীরে অশান্তির আগুন জ্বালানোয় ইন্ধন দিয়েছে বলে মত মোদী সরকারের। সেই প্রেক্ষাপটেই বসিতকে ডেকে পাঠিয়ে বাহাদুরের দৃষ্টান্ত দেখিয়ে পাকিস্তানকে ডিমার্চ দেওয়া হল।
ঘটনাচক্রে আজই কাশ্মীরের যুবকদের কাছে শান্তি, সৌহার্দ্য তৈরির বার্তা দিয়ে তাঁদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারতের সকলে কাশ্মীরকে ভালবাসে বলে মন্তব্য করেছেন। সেদিনই পাক হাই কমিশনারকে ডেকে সীমান্ত সন্ত্রাস প্রসঙ্গে কঠোর মনোভাব জানাল নয়াদিল্লি।