নয়াদিল্লি: পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইকে ভারত সম্পর্কে নানা গোপন, গুরুত্বপূর্ণ নথি পাচার ও জাতীয় স্বার্থ বিকিয়ে দেওয়ায় দোষী সাব্যস্ত করা হল ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনে এক সময় কাজ করা প্রাক্তন কূটনীতিক মাধুরী গুপ্তাকে।
দিল্লি হাইকোর্টের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সিদ্ধার্থ শর্মা চরবৃত্তি, আইনে সুরক্ষিত গোপন তথ্য, খবর অন্যায় ভাবে পাচারের দায়ে সরকারি গোপনীয়তা রক্ষা আইনের নানা ধারায় তাঁকে অপরাধী সাব্যস্ত করেন।
তবে কী সাজা তাঁকে দেওয়া হবে, সে ব্যাপারে আগামীকাল সওয়াল শুনবে আদালত।
মাধুরী ছিলেন প্রতিবেশী দেশের রাজধানীর ভারতীয় হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি (প্রেস ও ইনফর্মেশন)। তাঁকে সরকারি গোপনীয়তা রক্ষা আইনের ৩ ও ৫ ধারায় চরবৃত্তির জন্য দোষী ঘোষণা করা হল। এতে সর্বোচ্চ সাজা তিন বছর কারাবাস বা জরিমানা বা একসঙ্গে দুটিই।
২০১০ এর ২২ এপ্রিল মাধুরীকে অতি গোপনীয় তথ্য পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দেওয়া, মুবসার রাজা রানা ও জামসেদ নামে দুই আইএসআই চরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল।
মাধুরীর বেশ কিছু ই মেল তদন্তকারীদের হাতে আসে, যা থেকে ইঙ্গিত, জামসেদের সঙ্গে তাঁর প্রেম হয়েছিল। তাঁর গতিবিধি নিয়ে সন্দেহের উদ্রেক হওয়ায় তাঁকে দিল্লিতে তলব করা হয়। জেরায় তিনি নাকি অপরাধ কবুল করেন। জানা যায়, ইসলামাবাদ থাকার সময় জাভেদ রশিদ নামে জনৈক পাকিস্তানি সাংবাদিকের মাধ্যমে মাধুরীর পরিচয় হয় মুবাসির রাজা রানা, জামসেদের সঙ্গে। দুজনেই আইএসআই এজেন্ট। মাধুরীকে জেরা করে বেরিয়ে আসে, রানা তাঁকে জানান, জম্মু ও কাশ্মীরে ২০২০ পর্যন্ত ৩১০টি হাইড্রো-ইলেকট্রিক পাওয়ার প্রজেক্টের প্রস্তাব রয়েছে। এ ব্যাপারে মাধুরীকে খোঁজ নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়। মাধুরী এজন্য ছুটি কাটানোর নামে জম্মু ও কাশ্মীর ঘুরে যান। বিদেশ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রক, ভারতীয় সেনাবাহিনী ও ভারতীয় হাইকমিশনে কোন কোন অফিসারকে কোথায় নিয়োগ করা হচ্ছে, সে ব্যাপারে ও তাঁদের আত্মীয়স্বজনদের নানা তথ্যও মাধুরী পাচার করেছেন, যাতে ওদের জীবন বিপন্ন হতে পারত। সন্ত্রাসবাদ, কাশ্মীর, ভারতের আফগানিস্তান সংক্রান্ত নানা কৌশলগত তথ্যও মাধুরী পাচার করেছেন। কখনও মুখোমুখি সাক্ষাত্কারে, কখনও ই মেলে, ব্ল্যাকবেরি ফোনের মাধ্যমে মাধুরী তথ্য পাচার করতেন। এজন্য আইএসআই তাঁকে একটি বিশেষ ইমেল আইডি তৈরি করে দিয়েছিল। ওরাও বিশেষ আইডি মারফতই মাধুরীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করত।