নয়াদিল্লি:  আর ঠিক দুদিনের অপেক্ষা। আগামী শনিবার প্রথমবার জলে ভাসতে চলেছে দেশে তৈরি বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক বলে উল্লিখিত সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ডেস্ট্রয়ার শ্রেণির যুদ্ধজাহাজ ‘মর্মুগাও’।

প্রতিরক্ষা সূত্রের খবর, এই জাহাজটি তৈরি হচ্ছে মুম্বইয়ের মাজগাঁও ডকে। আগামী ২ বছরের মধ্যে ভারতের নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছে এই রণতরী।

কেন এত বিপজ্জনক আখ্যা দেওয়া হয়েছে মর্মুগাও-কে?

জানা গিয়েছে, মর্মুগাও হল কেন্দ্রের প্রজেক্ট ১৫-বি আওতাধীন দ্বিতীয় জাহাজ। বলা হচ্ছে, এর আগে এত উন্নত যুদ্ধজাহাজ ভারতে তৈরি হয়নি। মোট চারটি এধরনের জাহাজ নির্মাণ হবে। মোট খরচ প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা।

কী আছে মর্মুগাও-তে?

জানা গিয়েছে, জাহাজটির মোট ভর প্রায় ৭,৩০০ টন। দৈর্ঘ্য ১৬৩ মিটার। জাহাজটিকে শক্তি জোগায় চারটি ইউক্রেনীয়-জাত গ্যাস টার্বাইন ইঞ্জিন। সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৩০ নটের কিছু বেশি(৫৬ কিলোমিটার)।

নৌসেনা সূত্রে খবর, জাহাজে ৫০ জন অফিসার এবং ২৫০ নাবিকের থাকার সংস্থান রয়েছে। একবারে জাহাজটি ৪ হাজার নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত যাত্রা করতে সক্ষম।

জানা গিয়েছে, এই জাহাজটি বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন মিসাইল ডেস্ট্রয়ার গোত্র-ভুক্ত। এতে রয়েছে সর্বাধুনিক সমরাস্ত্র, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন স্টেলথ মোড (শত্রুর রেডারে অধরা) এবং স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রাংশ।



নৌসেনা সূত্রে খবর, এই জাহাজে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম সেরা বলে পরিচিত ইজরায়েলি মাল্টি-ফাংশান সার্ভেলেন্স থ্রেট অ্যালার্ট রেডার (সংক্ষেপে এমএফ-স্টার), যা কয়েক’শ দূর থেকেও আকাশে থাকা যে কোনও শত্রু বিমান বা ক্ষেপণাস্ত্রকে অবলীলায় নিশানা করতে পারে।

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, একবার এই নিশানা স্থির (সামরিক পরিভাষায় টার্গেট লক)হয়ে গেল এমএফ-স্টার স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার টার্গেটের দিকে একাধিক দূরপাল্লার ভূমি থেকে আকাশ (এলআর-স্যাম) ‘বারাক-৮’ ক্ষেপণাস্ত্রকে পাঠিয়ে দেয়। ফলে, বাঁচার কোনও সম্ভাবনা থাকে না শত্রুর।

ভারত ও ইজরায়েলের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে এলআর-স্যাম ক্ষেপণাস্ত্র। এর সর্বাধিক পাল্লা ৭০ কিলোমিটার। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি এতটাই শক্তিশালী ও নিখুঁত, যে বিশ্বের তাবড় তাবড় সুপারপাওয়ার দেশ এর বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ঠিক যেমনটা করেছে ভারত-রুশ যৌথ উদ্যোগে তৈরি ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রের ওপর।

এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, মর্মুগাও-তে ব্রহ্মোস মিসাইলও থাকবে। যা ৩০০ কিলোমিটার দূরে থাকা ভূমি ও আকাশে যে কোনও শত্রু নিশানাকে ধ্বংস করতে সক্ষম। এই সব বিষয়গুলিই মর্মুগাও যুদ্ধজাহাজকে আরও বিধ্বংসী করে তুলেছে।