শ্রীহরিকোটা: ইসরোর মুকুটে নয়া পালক। সোমবার, অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন স্পেস সেন্টার থেকে জিওসিনক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল মার্ক থ্রি ডি ওয়ান (সংক্ষেপে জিএসএলভি মার্ক থ্রি-ডি ১) সফল ভাবে মহাকাশে পাঠাল ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন বা ইসরো।
সোমবার বিকেল ৫টা ২৮ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধবন স্পেস সেন্টার থেকে আকাশে পাড়ি দেয় এই দৈত্যাকার রকেটটি। ৩০০ কোটি টাকার এই রকেট তৈরিতে সময় লেগেছে ১৫ বছরের বেশি। বিজ্ঞানীরা বলেন, মনস্টার রকেট বা রাক্ষুসে রকেট, আসল নাম অবশ্য 'ফ্যাট বয়'।


[embed]https://twitter.com/DDNewsLive/status/871698071230533633[/embed]

উচ্চতা ৪৩.৪৩ মিটার বা প্রায় ১৩ তলা বাড়ির সমান। ওজনে ৬৪০ টন। ইসরোর মতে, রকেটটি ২০০টি পূর্ণবয়স্ক এশীয় হাতির ওজন ধরে বা ৫টি জাম্বো জেটের।
সফল উৎক্ষেপণের পর ইসোর চেয়ারম্যান এ এস কিরণ কুমার দিনটিকে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে বিজ্ঞানীদের প্রশংসা করেন। তিনি জানিয়েছেন, এর থেকে ভারী রকেট এর আগে কখনও ভারত থেকে ছাড়া হয়নি।
এই বিশাল রকেটে করে এদিন মহাকাশে পাঠানো হল যোগাযোগব্যবস্থার উপগ্রহ জিস্যাট-১৯ উপগ্রহ। যার ওজন ৩,১৩৬ কেজি। আয়ু ১০ বছর। উৎক্ষেপণের ঠিক ১৬ মিনিট পর অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে জিস্যাটকে জিওসিনক্রোনাস ট্রান্সফার অরবিটে প্রতিস্থাপন করে রকেটটি।


[embed]https://twitter.com/RashtrapatiBhvn/status/871702500843376643[/embed]

[embed]https://twitter.com/RashtrapatiBhvn/status/871702572876345344[/embed]

[embed]https://twitter.com/RashtrapatiBhvn/status/871702622847283200[/embed]

জিএসএলভি-র সাফল্যে অভিনন্দন জানান রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রণববাবু লেখেন, ইসরোর সাফল্যে দেশ গর্বিত। কিরণ কুমারকে লেখা এক বার্তার মাধ্যমে জন্য তিনি দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থার প্রত্যেক সদস্যকেও অভিনন্দন জানান।
অভিনন্দন জানিয়েছেন মোদীও। টুইটারে তিনি লেখেন, জিএসএলভি মার্ক থ্রি-র সাফল্যের জন্য ইসরোকে অভিনন্দন। এর ফলে, দেশের পরবর্তী প্রজন্মের লঞ্চ ভেহিকল ও উপগ্রহ নির্মাণের দিকে আরও এক ধাপ এগলো ভারত।


[embed]https://twitter.com/narendramodi/status/871702786760728576[/embed]

[embed]https://twitter.com/narendramodi/status/871703065484816385[/embed]

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসরো, জিএসএলভি মার্ক থ্রি-র মতো রকেট বানিয়ে ফেলায়, বেশি ওজনের উপগ্রহ মহাকাশে পাঠানোর ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের লঞ্চিং ভেহিকলের উপর ভারতের নির্ভরতা কমবে।
এর থেকে উৎক্ষিপ্ত হতে পারে ৪০০০ কেজির বেশি ওজনের উপগ্রহ। রকেটের মূল তিনটি জিনিস- সলিড এস ২০০ স্টেজ, লিকুইড এল ১১০ স্টেজ ও সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী সি ২৫ ক্রায়োজিনিক আপার স্টেজ- সবই এ দেশে তৈরি। এর সফল উৎক্ষেপণ হলে প্রমাণ হয়ে যাবে, ইসরো এত ভারী রকেট নিজেদের জোরেই মহাকাশে পাঠাতে পারে।
মহাকাশে মানুষ পাঠানোর পক্ষে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এ জন্য জরুরি প্রযুক্তি তৈরি করে ফেলেছে ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা, তৈরি স্পেস স্যুটও। এই মিশন সফল করতে কেন্দ্রের কাছ থেকে ১২,৫০০ কোটি টাকা চেয়েছে ইসরো। তা বরাদ্দ হলে ৭ বছরের মধ্যে ভারতীয় নভশ্চররা প্রকৃত অর্থেই আকাশ ছুঁতে পারবেন।